প্রকাশিত : ৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:২০

কাবুলে ‘ভুল করে’ ১০ আফগান হত্যায় কোনো ‘আইনভঙ্গ হয়নি’: পেন্টাগন

অনলাইন ডেস্ক
কাবুলে ‘ভুল করে’ ১০ আফগান হত্যায় কোনো ‘আইনভঙ্গ হয়নি’: পেন্টাগন

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত আগস্টে আইএস সন্দেহে শিশুভর্তি একটি গাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এতে সাত শিশুসহ প্রাণ হারান ১০ নিরীহ আফগান। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। এবার চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে পেন্টাগন বলেছে, ওই ঘটনায় কোনো ধরনের ‘আইনভঙ্গ হয়নি’। মার্কিন বিমান বাহিনীর ইন্সপেক্টর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামি সাইদের ভাষায়, ‘এটি ছিল স্পষ্ট ভুল’। খবর বিবিসির।

তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মাত্র একদিন আগে, গত ২৯ আগস্ট ওই ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে এক ত্রাণকর্মী ও তার পরিবারের নয় সদস্য প্রাণ হারান। এর মধ্যে সাতজনই শিশু। সবচেয়ে ছোট শিশুটির বয়স ছিল মাত্র দুই বছর আর বড় জনের ১২।

ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগীদের আত্মীয় রামি ইউসুফি অভিযোগ করেন, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে নির্মম হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, ওরা আমাদের পরিবারকে কেন মারলো? আমাদের শিশুদের? তারা এমনভাবে পুড়ে গেছে যে কাউকে চেনা যাচ্ছে না।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামি সাইদের ভাষ্যমতে, নির্দেশপালনে ত্রুটির পাশাপাশি নিশ্চিতকরণে ভুল এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার সম্মিলিত কারণে এমন ‘দুঃখজনক হতাহতের’ ঘটনা ঘটেছে। তবে এর কারণে যুদ্ধআইনসহ কোনো ধরনের আইনের লঙ্ঘন হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

মার্কিন এ কর্মকর্তার কথায়, এটি অপরাধমূলক কোনো আচরণ নয়। এটি আকস্মিক ঘটনা, (দায়িত্বে) অবহেলা।

গত আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পরপরই দেশত্যাগের চেষ্টায় হাজার হাজার আফগান কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করেন। সেখানে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে গত ২৮ আগস্ট ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। এতে ১৩ মার্কিনিসহ প্রাণ হারান অন্তত ১৭০ জন। এ ঘটনার পরদিনই কাবুলে শিশুভর্তি ওই গাড়িতে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

সামি সাইদ সাংবাদিকদের জানান, যে কর্মকর্তারা ড্রোন হামলা চালিয়েছিলেন, তারা নিশ্চিত ভেবেছিলেন আইএসের দ্বিতীয় কোনো হুমকি ধ্বংস করছেন। তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, একটি সাদা টয়োটা করোলা গাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে। তবে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ভুল গাড়ি চিহ্নিত করেছিলেন বলে দাবি করেন সাইদ। তিনি বলেন, শুধু যে টয়োটা করোলায় আমাদের হামলা করা উচিত ছিল, আমরা সেটিতে করিনি।

এমনকি, হামলার দু’মিনিট আগে ঘটনাস্থলে যে একটি শিশু ঢুকেছিল, সেটিও দেখেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। তাদের ধারণা ছিল, কাবুল বিমানবন্দরে হামলাকারী একটি কম্পিউটার ব্যাগে বিস্ফোরক নিয়ে গিয়েছিলেন। এ কারণে ড্রোন হামলার আগে নজরদারিতে থাকা একজনের কাছে একটি কম্পিউটার ব্যাগ দেখেই তারা ধরে নেন, তিনিও আইএস সদস্য। শেষপর্যন্ত দেখা যায়, ওটি আসলেই একটি কম্পিউটারের ব্যাগ ছিল। শুধু মাঝে থেকে প্রাণ গেলো ১০ নিরীহ আফগানের।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে