প্রকাশিত : ৯ মে, ২০২২ ১১:৫১

রহস্যজনক হেপাটাইটিস : যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ শিশুর মৃত্যু চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা

অনলাইন ডেস্ক
রহস্যজনক হেপাটাইটিস : যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ শিশুর মৃত্যু চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা

 

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে শতাধিক শিশুর শরীরে রহস্যজনক ও গুরুতর যকৃতের সমস্যা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) রহস্যজনক এই হেপাটাইটিস সম্পর্কে সতর্ক করার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৪টি রাজ্যে এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিলেছে। চিকিৎসকরা এই রোগ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।

যকৃতের টিস্যুর প্রদাহকে হেপাটাইটিস বলে বর্ণনা করা হয়। করোনা মহামারির পর অ্যাডেনোভাইরাস নামক একটি সাধারণ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। ভাইরাসটি এই হেপাটাইটিসের কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

গত শুক্রবার সিডিসির চিকিৎসক জে বাটলার বলেন, কী কারণে এই অসুস্থতা হচ্ছে, তা পরিষ্কার নয়। অর্ধেক শিশুর শরীরে অ্যাডেনোভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি না, এটাই অসুস্থতার কারণ কি না।

অ্যাডেনোভাইরাসের বেশ কয়েকটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে সর্দি, জ্বর, গলা ব্যথা ও চোখ গোলাপি হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার কয়েকটি ধরনে অন্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ অন্যতম।

তবে অস্বাভাবিকভাবে অ্যাডেনোভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাননি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

চলতি সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোসহ বিশ্বের ২০টি দেশে প্রায় ৩০০ শিশুর শরীরে সম্ভাব্য গুরুতর হেপাটাইটিস শনাক্ত হয়েছে।
যকৃতের অবস্থা অনুযায়ী হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলোকে ভাইরাস এ, বি, সি, ডি এবং ই নামে ডাকা হয়। এসব ভাইরাসের কোনোটিই নতুন এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে শনাক্ত করা যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের বেশির ভাগের বয়স তিন বছরের কম। এদের মধ্যে প্রায় সব শিশুকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আটজনের যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
গত নভেম্বরে আলাবামা অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো গুরুতর হেপাটাইটিস পরীক্ষার জন্য ৯টি শিশুর নমুনা সংগ্রহ করেন, তখন থেকেই রহস্যের সূত্রপাত। যে ভাইরাসের কারণে সাধারণত হেপাটাইটিস হয়, পরীক্ষায় শিশুদের শরীরে সেই ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। তবে অ্যাডেনোভাইরাস শনাক্ত হয়।

বাটলার বলেন, ওই শিশুদের কারোরই কভিড টিকা দেওয়া হয়নি। তাই কভিড টিকার কারণে এই রোগের বিস্তার ঘটার বিষয়ে অনলাইনে যেসব জল্পনাকল্পনা চলছে, তা ভুল।
সাধারণত ভাইরাসের বিস্তার না ঘটা পর্যন্ত হেপাটাইটিসের কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। তবে বিস্তার ঘটলে যকৃতের প্রদাহ, জ্বর, ক্লান্তি, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, বমি করা, পেটের ব্যথা, গাঢ় মূত্র, হালকা রঙের মল, গাঁটে ব্যথা এবং জন্ডিসের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

সূত্র : এপি

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে