প্রকাশিত : ১১ মে, ২০২২ ১৬:৫৮

আইন অনুযায়ী যা ঘটতে পারে শ্রীলঙ্কায়

অনলাইন ডেস্ক
আইন অনুযায়ী যা ঘটতে পারে শ্রীলঙ্কায়

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট মারাত্মক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০। এদিকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে চলমান বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে গেছে দেশটির মন্ত্রিসভা। এখন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে মন্ত্রিপরিষদ ছাড়াই ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি সংসদের একজন সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। তাছাড়া একই প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভাও গঠন করতে পারবেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হবে। তবে সংসদে তার যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে কি না সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সব দলের সমন্বয়ে ঐক্যেরভিত্তিতে সরকার গঠনেরও চেষ্টা করতে পারেন। তবে বিরোধীদের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা তার জন্য প্রায় অসম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

একদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য অন্যদিকে প্রেসিডেন্টও যদি পদত্যাগ করেন তাহলে সংসদের স্পিকার এক মাসের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হবেন। তারপর নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা একজনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন।

প্রেসিডেন্ট যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে তাকে অভিশংসন করাও সহজ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে প্রথমেই স্পিকারের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। সুপ্রিম কোর্ট তো রয়েছেই। পাশাপাশি কমপক্ষে ১৫০ আইনপ্রণেতার সমর্থন লাগবে। বিরোধীদের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও নেই। তাই প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা খুবই জটিল হবে।

৪৫ বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। এর আগে একবার রাষ্ট্রপতিকে অপাসরণের ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়। সংবিধানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অন্যদিকে মন্ত্রী পরিষদেরও প্রধান। দেশটির প্রধান বিচারপতি ও পুলিশ প্রধানকেও তিনি নিয়োগ দেন।

প্রেসিডেন্ট সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও নির্বাহী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ প্রয়োজন। প্রশাসনিক এমন সংকটে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চরম বিদ্যুৎ সংকট, প্রয়োজনীয় খাবারের ঘাটতি ও সব পণ্যের মূল্য বাড়ায় বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চাইছেন। তবে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে বসবাস করে। ১৩ বছর আগে দেশটিতে এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ শেষ হয়। সে সময় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। ফের নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে দেশটিতে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে