গরমে অতিষ্ঠ বার্লিনের গৃহহীনদের জন্য বিশ্রাম, স্নানের ব্যবস্থা
![গরমে অতিষ্ঠ বার্লিনের গৃহহীনদের জন্য বিশ্রাম, স্নানের ব্যবস্থা](./assets/news_images/2022/07/23/germany-1-20220723135526.jpg)
জার্মানির বার্লিনে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা আড়াই থেকে সাড়ে ছয় হাজারের মতো। মাথার ওপর ছাদ না থাকায় তীব্র গরমে তারাই আছেন সবচেয়ে বেশি বিপদে।
ইউরোপের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। গত ২০ জুলাই বার্লিনে তাপমাত্রা পৌঁছেছে রেকর্ড ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বার্লিনের অধিবাসীরা ফ্যান ছেড়ে বা জানালার পর্দা নামিয়ে তাপ থেকে কিছুটা রক্ষা পাচ্ছেন। কিন্তু গৃহহীনদের জন্য সংকট আরও ভয়াবহ। তাদের এতটুকু শীতল বাতাস পাওয়ার নেই কোনো ব্যবস্থা।
বার্লিনের শ্যোনেব্যার্গ জেলায় চালু হয়েছে ‘হিটৎসেহিল্ফে’ বা ‘গরমে সহায়তা’ নামের একটি প্রকল্প। বার্লিন সিনেটের অর্থায়নে এই পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আইবি বার্লিন-ব্রান্ডেনবুর্গ। এতে খরচ হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ইউরো। এর আওতায় একটি বাড়িতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গৃহহীনদের আধা ঘণ্টার জন্য বিশ্রামের বিছানা এবং স্নানের জন্য বাথরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভবনটি মূলত শীতকালে ‘কাল্টেহিল্ফে’ বা ‘শীতের সহায়তা’ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো। তবে এখন তীব্র গরমে দিনের বেলাও এর প্রয়োজন আরো বেশি দেখা দিয়েছে। শ্যোনেব্যার্গ জেলা কর্তৃপক্ষই এই ভবন বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছে। নিদ্রা ও স্নান ছাড়াও গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে খাবার ও শীতল পানীয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে এই ভবনে।
বার্লিনের অন্য অনেক গৃহহীনের মতো হিটৎসেহিল্ফে তীব্র গরমে আশ্রয় জুগিয়েছে বুলগেরিয়া থেকে আসা লিলিয়ানা এবং এলিয়াসকেও। মহামারির কারণে চাকরি ও বাসস্থান হারিয়ে একসময় যোগ দিতে বাধ্য হন যৌন পেশাতেও। অন্যদিকে, এলিয়াস তার সব কাগজপত্র হারিয়ে ফেলায় এখন কোথাও কোনো কাজও পাচ্ছেন না। প্রচণ্ড গরমে কয়েক ঘণ্টা মাথা গোঁজার ঠাঁই এবং ঠান্ডা জলে স্নান তাদের জোগাচ্ছে সারাদিনের চলার শক্তি।
শুরুতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এমন পদক্ষেপকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছিলেন অনেকেই। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা এই প্রকল্পে আস্থা অর্জন করতে শুরু করেছেন।
চরম তাপমাত্রার ঝুঁকি সম্পর্কে বার্লিনের বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বার্লিনের বাম দলের রাজনীতিবিদ সিনেটর কাটিয়া কিপিং৷ তিনি বলেন, ‘শীতকালে কাল্টেহিল্ফের জন্য হটলাইনের নম্বর অনেকের কাছেই রয়েছে। কিন্তু গ্রীষ্মের তীব্রতার ব্যাপারটি অনেকেরই জানা ছিল না।’
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন