প্রকাশিত : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৪:৪১

চিকিৎসকের অপেক্ষায় থেকে মায়ের কোলেই শিশুর মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
চিকিৎসকের অপেক্ষায় থেকে মায়ের কোলেই শিশুর মৃত্যু

চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই মায়ের কোলেই মৃত্যু হয়েছে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল সে। কিন্তু সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের মধ্য প্রদেশের জাবালপুর জেলায়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় এমন অবহেলা সবাইকে হতবাক করেছে।

রিশি নামের ওই ছোট্ট শিশুটিকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান তার বাবা সঞ্জয় পান্দ্রে এবং তার পরিবার। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার পরেও অসুস্থ শিশুটির চিকিৎসায় এগিয়ে আসেননি কোনো চিকিৎসক। ফলে অসহায় বাবা-মায়ের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুটি।

এই ঘটনা আবারও রাজ্যের দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে তুলে ধরেছে। ওই শিশুর মৃত্যুতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুটির মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিযুক্ত চিকিৎসক বা মেডিকেল অফিসারদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

মধ্য প্রদেশে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটতে দেখা যাচ্ছে। গত মাসেই হাসপাতাল থেকে মায়ের মরদেহ বহন করার জন্য কোনো গাড়ি না পেয়ে মোটরসাইকেলে বেঁধে বাড়িতে নিয়ে গেছেন প্রদেশের আনুপ্পুর জেলার গুদারু গ্রামের এক যুবক।

গত ১ আগস্ট শাহোদল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক যুবককে মায়ের মরদেহ মোটরসাইকেলে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাড়িতে নিয়ে যেতে দেখা যায়, যা ভিডিও করে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অল্প সময়ে ভাইরাল হওয়া এ ঘটনায় দেশজুড়ে মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

আনুপ্পুর জেলার গুদারু গ্রাম থেকে অসুস্থ মা জয়মন্ত্রী যাদবকে শাহোদল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান সুন্দর যাদব নামের এক যুবক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মায়ের মৃত্যু হলে মরদেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে শবযান চান সুন্দর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গুদারু গ্রামে মরদেহ নিয়ে যেতে পাঁচ হাজার রুপি দিতে হবে।

সেই টাকা জোগাড় করতে না পারায় শেষমেশ ১০০ রুপি দিয়ে কাঠের পাটাতন কিনে তার ওপর মরদেহ রেখে দড়ি দিয়ে বাঁধেন সুন্দর। এভাবেই মোটরসাইকেলে করে মায়ের মরদেহ হাসপাতাল থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে নিয়ে যান তিনি।

সুন্দর যাদব জানান, বুকে ব্যথা অনুভব করায় মাকে প্রথমে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দুই হাসপাতালেই চিকিৎসক ও নার্সদের গাফিলতির কারণে তার মা মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

  দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে