দ্রুত নাগরিকদের রাশিয়ার অধিকৃত খেরসন ছাড়ার আহ্বান
রাশিয়ার অধিকৃত ইউক্রেনের খেরসনের নাগরিকদের দ্রুত অন্যত্র যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ-সমর্থিত নেতারা। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলের শহরটি পুনরুদ্ধারে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে ইউক্রেনের সেনারা।
শনিবার (২২ অক্টোবর) টেলিগ্রাম অ্যাপে এক বার্তায় আঞ্চলিক প্রশাসন জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের খেরসন শহর ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি, ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা ও পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয় ওই বার্তায়। তারা বেসামরিক নাগরিকদের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রবেশের জন্য নদীপথ অতিক্রম করতে নৌকা ব্যবহার করারও আহ্বান জানিয়েছে।
রাশিয়া যুদ্ধের প্রথম দিকে আঞ্চলিক রাজধানী শহর খেরসন দখল করে নেয় এবং পরবর্তীতে এই অঞ্চলের অন্যান্য অংশও দখল করে তারা। খেরসনসহ চারটি অঞ্চল গণভোটের মাধ্যমে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিন সরকার। বৃহস্পতিবার, তিনি ইউক্রেনীয় বাহিনীর ক্রমাগত পাল্টা আক্রমণের মধ্যে অঞ্চলগুলোতে সামরিক আইন ঘোষণা করেন।
খেরসনের ক্রেমলিন-সমর্থিত কর্তৃপক্ষ পূর্বে রাশিয়ান-নিযুক্ত কর্মকর্তা এবং ৬০ হাজার বেসামরিক নাগরিককে নদী পেরিয়ে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। স্থানীয় নেতা ভ্লাদিমির সালদো বলেন, এটি একটি সমন্বয় প্রক্রিয়া এবং ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হবে।
এই অঞ্চল থেকে ২৫ হাজারের মতো মানুষ নদী পার হয়ে রাশিয়ার সীমান্তে গেছেন। বেসামরিক নাগরিকরা স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন বলেও দাবি জানান রুশ সমর্থিত আরেক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা তার টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, ‘সবার আগে হলো জীবন। আমরা কাউকে কোথাও টেনে নিই না’।
এদিকে, ইউক্রেনীয় ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা জোরপূর্বক বাসিন্দাদের রাশিয়া বা রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চলে স্থানান্তরের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিয়েভ খেরসনের বাসিন্দাদের স্থানান্তরের প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছে। একজন স্থানীয় কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন যে মস্কো বেসামরিক নাগরিকদের জিম্মি এবং তাদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে চায়।
অপরদিকে, ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিডে রুশ হামলা অব্যাহত থাকায় দেশের মধ্য ও পশ্চিম অংশে কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলছে যে রাশিয়া ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। আকাশ ও সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা ৩৩টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১৮টি ভূপাতিত করেছে বলেও দাবি তাদের।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় আট মাস। এখনও চলছে হামলা-পাল্টা হামলা। যুদ্ধ সমাপ্তির কোনো লক্ষণ দেখছেন না বিশ্লেষকরা। যুদ্ধের ডামাডোলে আরও একটি মন্দার সম্মুখীন বিশ্ব অর্থনীতি।
সূত্র: আল-জাজিরা
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন