কেনিয়ায় পুলিশের গুলিতে পাকিস্তানের সাংবাদিক নিহত
কেনিয়ায় পাকিস্তানের এক সাংবাদিক দেশটির পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। নিহত ওই সাংবাদিকের নাম আরশাদ শরিফ। স্থানীয় সময় রোববার (২৩ অক্টোবর) এ ঘটনা ঘটে।
দেশটির পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, একটি চলন্ত গাড়ি থামাতে গিয়ে ‘ভুলবশত’ তাকে অন্য আরেকজন মনে করে পুলিশ গুলি চালায়। এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশও করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
সাংবাদিক আশরাফ শরিফ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সমালোচক ছিলেন এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একজন বড় সমর্থক ছিলেন। দেশে হয়রানির স্বীকার হচ্ছিলেন এমন অভিযোগে গত আগস্টে ৪৯ বছর বয়সী শরিফ দেশ ছাড়েন। কেনিয়া যাওয়ার আগে তিনি যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়েও অবস্থান করেন।
তবে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় তিনি কী করতেন, তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে, সোমবার (২৪ অক্টোবর) পাকিস্তানের করাচিতে সাংবাদিকরা তার হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
কেনিয়ার পুলিশের পর্যবেক্ষক টিম, ইন্ডিপেনডেন্ট পুলিশ ওভারসাইট অথরিটি (আইপিওএ) জানায় যে, রাজধানী নাইরোবির কাছে কাজিয়াডো কাউন্টিতে রোববার সন্ধায় ঘটনাস্থলে তারা প্রতিনিধি দল পাঠায়। আইপিওএ-এর চেয়ারপারসন অ্যান মাকোরি সাংবাদিকদের বলেছেন, দলটি ‘একজন পাকিস্তানি নাগরিককে পুলিশের হত্যার অভিযোগ তদন্ত করবে’।
পুলিশের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, পুলিশ সদস্যরা একটি চুরি যাওয়া গাড়ি খুঁজতে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিল। এসময় ওই সাংবাদিকের গাড়িটি চলে আসে। সন্দেহ হলে সেটি থামাতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপর গুলি চালানো হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ টুইটার বার্তায় বলেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে তার সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ‘সাংবাদিক আরশাদ শরিফের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
পরে তিনি আরও জানান যে, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি, যেন ঘটনাটির সঠিক তদন্ত হয়। ওই সাংবাদিকের মরদেহ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারেও কথা বলেছেন তিনি।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব তার মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্ত তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
টুইটার বার্তায় শরিফের স্ত্রী জাভেরিয়া সিদ্দিক বলেছেন যে তিনি একজন ‘বন্ধু, স্বামী এবং প্রিয় সাংবাদিককে’ হারিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
চলতি বছর এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা হয়। নিহত সাংবাদিক শরিফ ইমরান খানের একজন বড় সমর্থক ছিলেন। এরপর থেকেই তিনি অভিযোগ করে আসছিলেন যে দেশটির ফেডারেল তদন্ত সংস্থা তাকে হয়রানি করছে এবং তিনি সেকারণে দেশ ছেড়ে চলে যান।
সূত্র: বিবিসি
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন