বিদেশে আশ্রিত নাগরিকদের ফিরতে নিষেধ করলো ইউক্রেন
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর বহু মানুষ দেশে ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। কিয়েভের যেসব নাগরিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের দেশে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার। বিশেষ করে শীতকালে শরণার্থী নাগরিকদের দেশে ফেরা মানা।
রাশিয়ার দফায় দফায় দেশটির পাওয়ার গ্রিডে হামলার কারণে জ্বালানি সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জ্বালানি ব্যবস্থার ওপর চাপ কমানোর জন্য সহায়তা করতে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আগামী বসন্তকাল পর্যন্ত ফিরে আসা উচিত নয় বলে মনে করছে কিয়েভ সরকার।
দেশটির শরণার্থী নাগরিকদের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিয়ানা ভেরেশ্চুক। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ অবকাঠামোর যে পরিস্থিতি তা সামলানো যাচ্ছে না। আপনারা দেখছেন, রাশিয়া কি করছে। শীতে আমাদের বাঁচতে হবে’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বিমান হামলা দেশটির জ্বালানি খাতের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ধ্বংস করেছে।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ভেরেশ্চুক বলেন যে যদিও তিনি চান ইউক্রেনীয়রা বসন্তে ফিরে আসুক, তবে আপাতত ফিরে আসা থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে’।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের অর্থনীতি খারাপ পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগামী বছর ৩৮ বিলিয়ন ডলার প্রত্যাশিত বাজেট ঘাটতি মেটাতে জরুরি সাহায্যের জন্য বিশ্বের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে যে ইউক্রেনের পরের বছর বেঁচে থাকার জন্য প্রতি মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার করে প্রয়োজন হবে। মস্কোর হামলা তীব্র হলে তা ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
গত ৮ অক্টোবর রাশিয়া-ক্রিমিয়া সংযোগ সেতু বিস্ফোরণে ধ্বংস হওয়ার পর দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে পুতিন সরকার। সম্প্রতি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে চেরকাসি অঞ্চল, যা রাজধানী কিয়েভের দক্ষিণ-পূর্বে এবং আরও পশ্চিমে খমেলনিটস্কি শহর।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মস্কো বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলে একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধে মাইন বসানোর জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ধ্বংস হলে লাখ লাখ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে। তবে রাশিয়া বাঁধটি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা অস্বীকার করেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে জাতিসংঘ ইউক্রেনের শরণার্থী সংখ্যা ৭৭ লাখ রেকর্ড করেছে রাশিয়াসহ যেখানে মোট জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪০ লাখ।
সূত্র: বিবিসি
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন