প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৬:২৭

কাতার বিশ্বকাপ: ফুটবলকে ঘিরে ফিফার যত আয়

অনলাইন ডেস্ক
কাতার বিশ্বকাপ: ফুটবলকে ঘিরে ফিফার যত আয়

ব্যবসা কি আসলেই সহজ, নিশ্চয়ই নয়। যদি আপনি একটি পণ্য তৈরি করেন এবং সেটি যদি সবাই কিনতে চায় আবার সেটি তৈরিতে আপনার তেমন খরচই না হয় তাহলে কি দাঁড়ায়? আপনি আসলে খুব দ্রুত প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন। বলাই বাহুল্য, ফুটবলের বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা এভাবেই অর্থ উপার্জন করে।

ফুটবল নিঃসন্দেহে গোটাবিশ্বে একটি জনপ্রিয় খেলা। শত বছর ধরে ফুটবলকে জনপ্রিয় করার পেছনে কাজ করে যাচ্ছে ফিফা। এই সংস্থার সূচনা হয় ১৯০৪ সালে। ফুটবলের উন্নয়ন, অখণ্ডতা রক্ষা এবং একে বিশ্বের আনাচে কানাচে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই অলাভজনক সংস্থাটির জন্ম।

২০১৮ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল রাশিয়া। সেই আয়োজন থেকে ফিফার আয় ছিল চারশ ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।

ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক দেশগুলোর আয়োজক কমিটি, পুরস্কারের অর্থ, দল ও সহায়তা কর্মীদের জন্য ভ্রমণ, থাকার ব্যবস্থা করে থাকে। শুধু তাই নয় বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরও আয়োজক দেশে খেলাধুলার বিকাশে সহায়তা করার জন্য একটি তহবিল প্রদান করে।

কাতার বিশ্বকাপের বিজয়ীরা ফিফার দেওয়া ৪৪০ মিলিয়ন ডলারের মোট পুরস্কারের ৪৪ মিলিয়ন পাবে।

ফিফার আয় হিসাব হয় চার বছর পর পর বিশ্বকাপকে ঘিরে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৮ সালে ফিফা ঘরে এনেছে, চারশ ৬০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে বিশ্বকাপ ছাড়াও ফিফার আয় ছিল ৭৬৬ মিলিয়ন ডলার।

মিডিয়া স্বত্ব

ফিফার বেশিরভাগ আয় আসে বিশ্বকাপ ও অন্যান্য টুর্নামেন্টের টেলিভিশন সত্ত্ব বিক্রি করেই। গত চার বছর আগে যে আয়া হয়েছিল চারশ ৬০ কোটি মার্কিন ডলার তা সেখান থেকেই।

মার্কেটিং স্বত্ব

বিশ্বব্যাপী বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো সংস্থার ইভেন্টগুলোতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ফিফাকে অর্থ প্রদান করে। সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডগুলো ফিফার উন্নয়ন এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিকল্পনায় অংশীদারিত্ব পায়। বিশেষ করে ফিফার অলাভজনক খাতে অর্থ দেয় সেগুলো। আন্তর্জাতিক, জাতীয় এবং তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবল খেলায় বিনিয়োগ করতে পারে সেসব সংস্থা।

বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোকে বিশ্বকাপে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, বিশ্বের একক সর্বাধিক দেখা টেলিভিশন ইভেন্টের জন্য। প্রায় পাঁচশ কোটি মানুষ, বলা চলে পৃথিবীর জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি, এ বছরের টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। পণ্য বিক্রির জন্য এটি একটি বড় প্ল্যাটফর্ম।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ঘিরে প্রচার স্বত্ব থেকে সংস্থাটি আয় করেছে ১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে এখান থেকে আয় হয়েছে ১৩১ মিলিয়ন ডলার।

টিকিটি বিক্রি ও আতিথেয়তা

আরও দুটি আয়ের উৎস হলো টিকিট বিক্রি ও আতিথেয়তায়। টিকিট বিক্রি থেকে সম্পূর্ণ আয় ফিফার সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি সহায়ক কোম্পানিতে যায়। ২০১৫-২০১৮ এই চার বছরের হিসাবে সেখান থেকে আয় হয়েছে ৭১২ মিলিয়ন ডলার।

২০২১ সালে, আরব কাপের জন্য টিকিট বিক্রি, হয় যখন প্রায় ৬ লাখ লোক অংশ নেয় এতে। সেখানে আয় ছিল ১২ মিলিয়ন ডলার। কাতার বিশ্বকাপের জন্য প্রায় তিন মিলিয়ন টিকিট বিক্রি হয়েছে। টিকিটের দাম ছিল একশ থেকে ১১শ ডলারের মধ্যে। আরও একটি সাফল্যের বছর হতে যাচ্ছে ফিফার জন্য।

ব্র্যান্ডিং ও লাইসেন্সিং

লাইসেন্সিং ফিফার আরেকটি আয়ের উৎস। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হলো ফিফা ফুটবল গেমের ইলেকট্রনিক আর্টস সিরিজ, যা ফিফার সঙ্গে তার ২০ বছরের অংশীদারত্বের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে।

২০২১ সালে ফিফা ১৮০ মিলিয়ন ডলার আয় করে লাইসেন্স সত্ব বিক্রি করে। একই বছরে, ২০১৫ সালে ফিফা শীর্ষস্থানীয় কয়েক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পর দুর্নীতির কারণে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মার্কিন বিচার বিভাগ থেকে ২০১ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার পায়।

সূত্র: আল-জাজিরা

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে