প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৬:২৩

ল্যাবে তৈরি মাংস খাওয়ার অনুমোদন দিলো যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
ল্যাবে তৈরি মাংস খাওয়ার অনুমোদন দিলো যুক্তরাষ্ট্র

প্রাণীর কোষ থেকে ল্যাবে তৈরি মাংস খেতে পারবেন আমেরিকানরা। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এবার ল্যাবে তৈরি মাংস খাওয়ার অনুমোদন দিলো।

জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি কোম্পানি আপসাইড ফুডসকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে গত বুধবার। জীবন্ত প্রাণীর কোষ ব্যবহার করে স্টিলের ট্যাংকে এই মাংস তৈরি করেছে কোম্পানিটি। তবে এটি তৈরি করতে কোনও প্রাণীকে জবাই করার প্রয়োজন হবে না।

এফডিএ বলছে, এটি ল্যাব-উৎপাদিত মাংস বিক্রির অনুমোদন দিতে প্রস্তুত, তবে আরও সতর্কভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। সামুদ্রিক জীব থেকে খাবার তৈরি করতে চায় এমন সংস্থাগুলোও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এফডিএ-এর কমিশনার রবার্ট ক্যালিফ বলেছেন, ‘বিশ্ব একটি খাদ্যবিপ্লবের সম্মুখীন হচ্ছে এবং মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন খাদ্য সরবরাহে এ ধরনের উদ্ভাবনকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।

সিঙ্গাপুর বর্তমানে একমাত্র দেশ যেখানে ল্যাব-উত্পাদিত মাংস বৈধভাবে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ অনুমোদন একটি নতুন খাদ্য পণ্য বাজারে সরবরাহ করতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঐতিহ্যগতভাবে পশুপালন করার চেয়ে এটি আরও বেশি দক্ষ ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি।

খাদ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড সিন্থেসিস ক্যাপিটালের ম্যানেজিং পার্টনার কোস্তা ইয়ানোলিস ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ‘আমরা সেই দিনটি দেখতে পাচ্ছি যেখানে সত্যিই খাদ্যব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটছে’। যুক্তরাষ্ট্রের এটি বড় এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আপসাইড ফুডস, এর আগে মেমফিস মিটস নামে পরিচিত ছিল। প্রাণীর টিস্যু থেকে কোষ সংগ্রহ করে, তারপর বায়োরিয়াক্টরে ভোজ্য মাংস জন্মানো হয়। সংস্থাটির দাবি, এই মাংস ও প্রাকৃতিক মাংস অভিন্ন।

এফডিএ-এর অনুমোদনের পর এখন দেশটির কৃষি বিভাগের অনুমোদন পেলেই পরীক্ষাগারে তৈরি হওয়া এই মাংস বাজারে চলে আসবে। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে ল্যাবে তৈরি মাংস নিয়ে ভোক্তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়। যেখানে নতুন প্রজন্মের উদ্ভিদ-ভিত্তিক মাংসের বিকল্প যেমন ইম্পসিবল বার্গার প্রশংসিত হলেও খাদ্যব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে পারেনি।

কিন্তু ল্যাবে মাংস উৎপাদনকারী কোম্পানি, জলবায়ুর প্রভাব, খামার ও পশু কল্যাণের সমস্যা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের এই সময়ে নিজেকে একটি পরিবেশ বান্ধব বিকল্প হিসাবে দেখাতে আগ্রহী। গুড ফুড ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, বিশ্বজুড়ে ১৫০টিরও বেশি এ ধরনের কোম্পানি রয়েছে, যারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে এ খাতে।

খাদ্য টেকসই করা, এবার মিশরে কপ২৭ সম্মেলনে আলোচনার প্রধান একটি ইস্যু ছিল। কেননা খাদ্যের বৈশ্বিক উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পেছনে মানবসৃষ্ট কারণেই দায়ী, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে