প্রকাশিত : ৪ জানুয়ারী, ২০২৩ ১৬:২৩

মৃতদেহের সংকট, ব্যবহারিক ক্লাস থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক
মৃতদেহের সংকট, ব্যবহারিক ক্লাস থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

মৃতদেহের সংকটের কারণে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস ব্যাহত হচ্ছে। সেকারণে ভারতের রাজস্থান সরকারের কাছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তির কিংবা পরিত্যক্ত মৃতদেহ চেয়ে আবেদন করেছে।

 

বিশেষ করে রাজ্যের কোটা ও ঝালাওয়াড়ের মেডিকেল কলেজগুলো মৃতদেহের তীব্র সংকটের মধ্যে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের দলবদ্ধ করে ব্যবহারিক পড়াশোনা পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে মেডিকেল কর্তৃূপক্ষ।

জানা গেছে, সরকারি মেডিকেল কলেজ কোটায় ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে ৮ থেকে ১০টি মরদেহ। অন্যদিকে, ঝালাওয়াড়ে ২০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে দেওয়া হচ্ছে ৬টি মৃতদেহ।

যদিও মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন, ১০ জন ছাত্রের জন্য একটি মৃতদেহ সরবরাহের নির্দেশনা দেয়।

মেডিকেল ছাত্র, চিকিৎসক ও অন্যান্য বিজ্ঞানীদের শরীরবিদ্যা অধ্যয়নে গুরুত্বপূর্ণ হলো মৃতদেহ। তারা রোগের স্থান সনাক্ত করতে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করতে ব্যবহার করেন বিভিন্ন উপাদান। রাজস্থানসহ সারা ভারতে বেশিরভাগ রাষ্ট্র পরিচালিত মেডিকেল কলেজগুলো মৃতদেহের জন্য অনুদানের ওপর নির্ভর করে।

মৃতদেহের ঘাটতির কথা স্বীকার করে, ঝালাওয়াড় সরকারি মেডিকেল কলেজের ডিন শিব ভগবান শর্মা বলেন, তিনি দুই মাস আগে রাজ্য সরকারকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মৃতদেহ নেওয়ার দাবি করার অনুমতির জন্য চিঠি লেখেন।

ঝালাওয়াড়ের মৃতদেহ অনুদান কর্মসূচির কর্মকর্তা মনোজ শর্মা বলেছেন, বেসরকারিসহ রাজ্যজুড়ে প্রায় সমস্ত কলেজই মৃতদেহের সংকটের মুখোমুখি। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে জয়পুরের এসএমএস মেডিকেল কলেজ, যা রাজ্যের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এবং উদয়পুরের আরএনটি মেডিকেল কলেজ ব্যতিক্রম। তিনি আরও বলেন, গুজরাটের সীমান্তে উদয়পুরের অবস্থান এটিকে, শিক্ষার্থীদের জন্য মৃতদেহ সংগ্রহ সহজ করে তোলে।

তিনি জানান, ডিন শর্মা প্রাকৃতিক কারণে মারা যাওয়া নিঃস্ব ও পরিত্যক্ত ব্যক্তিদের মৃতদেহ নেওয়ার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়ের প্রস্তাব করেছেন। যদিও রাজ্য সরকার এখনো সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

শর্মা জোর দিয়ে বলেন, রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলোতে একই রকম পরিস্থিতি। শিক্ষার্থীরা এতে বঞ্চিত হচ্ছে।

ভরতপুর-ভিত্তিক এনজিও আপনা ঘর, যা নিঃস্ব ও পরিত্যক্তদের আশ্রয়স্থল, মৃতদেহ মেডিকেল কলেজে পাঠানোর প্রস্তাব করেছে এবং অনুমতির জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠিও দিয়েছে। এনজিও প্রতিনিধি বীরপাল সিং বলেন, প্রতি মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষ প্রাকৃতিক কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে মারা যায় এবং এটি ন্যায্য হবে যদি মৃতদেহগুলো মেডিকেলে অধ্যয়নের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে শত শত শিক্ষার্থীর উপকার হবে।

কোটা সরকারি মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান আরুশি জৈন বলেছেন, ২০১০ সাল থেকে মেডিকেল কলেজে মাত্র ৩৯টি মৃতদেহ দান করা হয়েছে। তিনি বলেন, মেডিকেল অধ্যয়নের জন্য একটি মৃতদেহের উপযোগিতা কল্পনার বাইরে এবং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ।

অপরদিকে, ঝালাওয়াড়ের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান গোপাল শর্মা বলেছেন, দেহ দান করার বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে