প্রকাশিত : ৭ জানুয়ারী, ২০২৩ ১২:০৭

ব্যাংকে মৃত ব্যক্তির নামে অ্যাকাউন্ট, হয়েছে লেনদেনও

অনলাইন ডেস্ক
ব্যাংকে মৃত ব্যক্তির নামে অ্যাকাউন্ট, হয়েছে লেনদেনও

কেউ লেখাপড়া জানেন না, কেউ নাম সই করতে পারেন না, কেউ আবার এসবের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেছেন। তাদের নামেই পশ্চিমবঙ্গের সিউড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকে চালু রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে আবার লেনদেন হচ্ছে কোটি কোটি রুপি।

গ্রামবাসীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেন জন্য জমা নেওয়া নথি ব্যবহার করেই খোলা হয়েছে অ্যাকাউন্টগুলো। এগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

কারা কীভাবে এত অ্যাকাউন্ট খুললো তা জানতে কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) তদন্ত করছে।

গত বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সিবিআই গিয়ে সিউড়ি কো অপারেটিভ ব্যাংকে ১৭৭ টি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিস পায়। এসব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি কালো রুপি সাদা করা হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। তাছাড়া সব অ্যাকাউন্ট খুলতে যে সইগুলো করা হয়েছে, সেগুলেঅ একই ব্যক্তি করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা। শুক্রবার ব্যাংকের ম্যানেজারকে বাকি নথি নিয়ে কলকাতায় সিবিআই সদর দপ্তরে হাজির হতে বলা হয়েছে।

ব্যাংকটিতে সিউড়ির হরিহরপাড়ার বাসিন্দা সুন্দরী বাস্কের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেখানে নিজের নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েন তিনি। সুন্দরী জানান, ‘আমি লেখাপড়া জানি না, সই করব কীভাবে? অন্য ব্যাংকে যে অ্যাকাউন্ট আছে সেখানে টিপ সই দিয়েছি। আমার কোনো মোবাইলই নেই, তার আবার নাম্বার!’

এছাড়া মৃত ব্যক্তির নামেও অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে ব্যাংকটিতে। পিয়াসার বাসিন্দা ভাগীরথ ঘোষ ও গোপাল ঘোষ নামে দুজনের অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে সিউড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকে।

ভাগীরথ ঘোষ বলেন, ‘গোপাল ঘোষ আমার ভাই। সে মারা গেছে তিন বছর আগে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াতে একটি অ্যাকাউন্ট ছিল আমার ভাইয়ের নামে ছিল। কিন্তু ও মারা যাওয়ার পর সেটি আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের নামে কোঅপারেটিভ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তা জানতাম না। ওই অ্যাকাউন্টে আমরা কোনো দিন লেনদেন করিনি।’

ওই এলাকাযর আরও অনেকের নাম রয়েছে ভুয়া অ্যাকাউন্টধারীর তালিকায়। এভাবে ভুরি ভুরি বেনামি অ্যাকাউন্ট পাওয়ার ঘটনায় রিজার্ভ ব্যাংকের ওপর দায় চাপিয়েছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘এগুলো রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন। ওরাই সব দেখে নথি যাচাই করে। আমরা শুধু লাইসেন্স দেই।’

তবে বিরোধী দলগুলো বলছে, এত ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুঁজতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই) হস্তরেখাবিদদের সাহায্য নিতে হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে