ব্রাজিলে বিক্ষোভের দায়ে গ্রেপ্তার ১৫০০
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে রোববার ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্যালেস এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালিয়েছে দেশটির সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কট্টরপন্থি নেতা জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা।
চরম ডানপন্থি এসব সমর্থক রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে একের পর এক জায়গায় হামলা চালান। বিরোধী দলের এ হামলার তীব্র সমালোচনা করে একে ‘ফ্যাসিস্ট’ হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা।
এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সুপ্রিম কোর্ট ও কংগ্রেসে হামলা চালিয়ে দাঙ্গার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ব্রাজিলে গণতন্ত্রের পক্ষে সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে কারাদণ্ডের দাবিতে দেশটির বৃহত্তম শহর সাও পাওলোতে স্লোগান দেয় জনতা।
সাও পাওলোতে বৃহৎ সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা পর্তুগিজ ভাষায় 'আমরা গণতন্ত্র' লেখা বড় ব্যানার নিয়ে মিছিল করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ৭৭ বছর বয়সী লুলা দেশের গভর্নরদের সঙ্গে কংগ্রেসের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট পরিদর্শন করেন। তিনি নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার অঙ্গীকার করেন। পরে এ ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ আটক করা হয়।
যদিও দেশটির সাবেক বলসোনারো বলেছেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। একই সঙ্গে ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদের অধিকারের পক্ষে তার অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন।
এদিকে নিজ দেশে দাঙ্গা বাধিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসে আশ্রয় নেয়ায় ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে এখান থেকে বের করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকজন মার্কিন এমপি।
তবে বলসোনারোর স্ত্রী ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় সোমবার জানান, অন্ত্রে ব্যথা অনুভব করায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে ছুরিকাঘাতের শিকার হন বলসোনারো। ছুরিকাঘাতের স্থানে প্রায়ই ব্যথা অনুভব করেন তিনি।
রোববার ব্রাজিলে হামলার ঘটনা ফের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে হামলার কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে যেমন ট্রাম্প সমর্থকরা হামলা চালিয়েছিলেন, তেমনই রোববার সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরাও সবুজ-হলুদ পতাকা গায়ে জড়িয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে একে একে কংগ্রেস, সুপ্রিমকোর্ট থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে ভাঙচুর চালান তারা।
অবশ্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষের পর রোববার সন্ধ্যায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এসব ভবনের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় পুলিশ।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা রোববার বন্যা বিধ্বস্ত আরারাকোয়ারা শহরে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাবস্থায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় হামলার খবর পান তিনি। এর পর সেখান থেকেই তিনি ডিক্রি জারি করেন।
ব্রাজিলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতাও দেয়া হয়। পরে রাজধানী শহরে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট লুলা নিজেই সুপ্রিমকোর্ট ভবনে গিয়ে ক্ষতি পরিদর্শন করেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন