প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২৩ ১৫:০৯

শীর্ষ ধনীর তালিকায় আদানির বড় উত্থান

অনলাইন ডেস্ক
শীর্ষ ধনীর তালিকায় আদানির বড় উত্থান

সম্প্রতি শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে আদানি গ্রুপ। সেই সঙ্গে ধনীদের তালিকায় আবারও উপরের দিকে উঠে আসতে শুরু করেছেন গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স বলছে, ২৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত গৌতম আদানির সম্পত্তিতে প্রায় ১৮ হাজার কোটি ডলার যুক্ত হয়েছে। আর এর মাধ্যমে তিনি এখন শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ২১ নম্বরে অবস্থান করছেন।

চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি মার্কন বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ‘ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক প্রতারণা’র অভিযোগ তোলে। তারপরই শনির কালো ছায়া নেমে আসে আদানি গ্রুপের ওপর। ফলস্বরূপ, তখন থেকে এখন পর্যন্ত আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানি প্রায় ১৪ হাজার কোটি ডলারের বাজারমূল্য হারিয়েছে।

ধস নামে আদানির ব্যক্তিগত সম্পদেও। প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে তিনি ছিলেন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষধনী। কিন্তু সেটি প্রকাশের পর আদানির ব্যক্তিগত সম্পত্তি একসঙ্গে এতটাই কমে যায় যে, শীর্ষ ধনীদের তালিকায় তিনি ৩০ এরও নিচে নেমে যান। মাত্র এক মাসে আট হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পদ হারান ৬০ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী।

তবে সম্প্রতি গত এক সপ্তাহ ধরে শেয়ারের দাম বাড়ার কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে আদানি গ্রুপ। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স বলছে, গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ৫ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। ফেব্রুয়ারির শেষে এ সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। আর গত 24 ঘন্টায় আদানির সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২০ লাখ ডলার।

বুধবার (৮ মার্চ) আদানি গ্রুপের পাঁচটি স্টক আপার সার্কিটে ছিল। পাশাপাশি অন্য সব স্টক সবুজ চিহ্নে বন্ধ হয়। তবে, বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় তিনটি শেয়ার আপার সার্কিটে যায়। অন্যদিকে, আদানি গ্রুপের আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের শেয়ারদর ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কমেছে।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স বলছে, আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদর গত পাঁচটি সেশনে ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারদর গত পাঁচটি ট্রেডিং সেশনে ২৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জির বেড়েছে ২১ দশমিক ৫৪ শতাংশ ও একই সময়ে আদানি পাওয়ারের শেয়ারদর বেড়ে ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ হয়েছে।

এদিকে, আদানি ট্রান্সমিশন গত পাঁচটি সেশনে ২১ দশমিক ৮৪ শতাংশ লভ্যাংশ পেয়েছে। আদানি উইলমারের শেয়ারদর বেড়েছে ২১ শতাংশ, একই সময়ে যেখানে আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেডডের বেড়েছে ১৭ শতাংশ। তাছাড়া এনডিটিভি, এসিসি ও অম্বুজা সিমেন্টের শেয়ারদর গত পাঁচটি সেশনে ২২ শতাংশ বেড়েছে।

তবে বুধবারের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার রেড জোনে রয়েছে। এগুলো হলো, আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পোর্টস, এসিসি ও অম্বুজা সিমেন্ট। এদিন আদানি পোর্টসের শেয়ারদর ১ দশমিক ৬২ শতাংশ, এসিসি লিমিটেডের ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ও অম্বুজা সিমেন্টসের শেয়ারদর বাজার শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই ১ দশমিক ৫৭ শতাংশেরও নিচে নেমে যায়।

আদানি গ্রুপের দাবি, তারা এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৩৭৪ কোটি রুপির শেয়ারভিত্তিক ঋণ পরিশোধ করেছে ও চলতি মাসের শেষ হতে না হতেই এ ধরনের সব অবশিষ্ট ঋণ পরিশোধ করে ফেলবে।

এদিকে, সম্প্রতি জিকিউজি পার্টনারস নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বিনিয়োগ সংস্থার কাছ থেকে ১৮৭ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পাওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে আদানি গ্রুপ। ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি রুপি। তাছাগা, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ভয়াবহ ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে আদানি নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র: বিটি মার্কেট টুডে

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে