প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৩ ১০:৪০

‘বই পড়ে যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে, তা মোবাইল স্ক্রিনে হবে না’

অনলাইন ডেস্ক
‘বই পড়ে যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে, তা মোবাইল স্ক্রিনে হবে না’

ভারতের ত্রিপুরায় শুরু হয়েছে ৪১তম আগরতলা বইমেলা। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে মেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। ১৩ দিনব্যাপী এই বইমেলা চলবে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত।

বইমেলা উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোবাইল কিংবা অ্যান্ড্রয়েডের বদৌলতে এখন বই কেনা থেকে প্রায় বিরতই থাকছে ছাত্র-যুবরা। এটি ঠিক নয়। স্ক্রিনটাইম বেশি হলে মাথা ও শরীর দুটোর ওপরই চাপ বেড়ে যায়। তাছাড়া, বই পড়ে যে বিষয়টা দীর্ঘদিন মনে থাকবে, সেটা স্ক্রিনে হবে না।

তিনি বলেন, বই-ই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধু। এর বিকল্প নেই। সভ্যতার উন্নতিতে এখন সব হারিয়ে যাচ্ছে। আগে বীরচন্দ্র স্টেট সেন্টার লাইব্রেরিতে শুধু একটি বই পড়ার জন্য সকাল থেকে যে দীর্ঘ লাইন দেখা যেতো, এখন তা আর দেখা যায় না।

মানিক সাহা বলেন, বই না থাকলে একটি ঘরকে যেমন অসম্পূর্ণ মনে হয়, তেমনি বই না পড়লে মানুষের শরীরকেও আত্মাহীন মনে হয়। বই পড়ে মানুষের চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতিরও প্রসার ঘটে।

এদিন পাঠ্যবই কেনার পাশাপাশি সিলেবাস বহির্ভূত বিভিন্ন বইয়ের প্রতিও নজর দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে নানা অজানা তথ্য মিলতে পারে। এর মাধ্যমেই এই বইমেলার সার্থকতা আসবে বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, বইমেলায় স্টল খোলার জন্য এবছর বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা এবং পুস্তক বিক্রেতাদের কাছ থেকে মোট ১৯৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু জমি সংকুলান না হওয়ায় ১৭৬টি স্টলকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বইমেলায় ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রকাশনার সংস্থার স্টল রয়েছে ৮২টি, বহিঃরাজ্যের ৭৯টি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতাদের স্টল রয়েছে ১৫টি।

এরপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ থেকে আগত সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি বলেন, স্ক্রিনে বেশি সময় দেওয়ার চেয়ে বইয়ে বেশি সময় দেন। কারণ স্ক্রিনে বেশি সময় দিলে মানুষের মস্তিষ্কে যেমন প্রভাব পড়ে, তেমনি স্ক্রিনের আলো থেকে চোখে ক্ষতি হতে পারে।

কুমিল্লা জেলা থেকে আগত এই রাজনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া একটি সীমানা এঁকে দিলেও সামাজিক এবং সংস্কৃতির দিক থেকে প্রচুর মিল রয়েছে। চলন-বলন, ভাষা কিংবা আদব-কায়দা সব ক্ষেত্রেই মিল দেখা যায়। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে বইপ্রেমী করে তুলতে এ ধরনের বইমেলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহম্মদ, তথ্য ও সংস্কৃতি আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদারসহ অনেকে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে