প্রকাশিত : ১ আগস্ট, ২০২৩ ১৩:৩৩

চলন্ত ট্রেনে চারজনকে হত্যার পর যা বললেন আরপিএফ জওয়ান

অনলাইন ডেস্ক
চলন্ত ট্রেনে চারজনকে হত্যার পর যা বললেন আরপিএফ জওয়ান

ভারতে চলন্ত ট্রেনে গুলি করে এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও তিন যাত্রীকে হত্যার অভিযোগে রেলওয়ের এক নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত চেতন সিং হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর মরদেহের পাশে দাঁড়িয়েই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নামে প্রশংসা ও ভিন্ন মতাদর্শীদের কঠোর ভাষায় হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সেই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।

সোমবার (৩১ জুলাই) ভোররাতে জয়পুর-মুম্বাই এক্সপ্রেসে ভারতীয় রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) ওই সদস্যের এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রাণ হারান তিন যাত্রীসহ চারজন। চতুর্থ ব্যক্তি হলেন আরপিএফেরই সহকারী উপ-পরিদর্শক টিকা রাম মীনা।

ওই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে চেতন সিংকে রক্তাক্ত দেহগুলোর পাশে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এসময় তিনি বলছিলেন, যদি ভোট দিতে হয়, যদি ভারতে থাকতে হয়, আমি বলছি, তাহলে শুধু মোদী আর যোগী- এই দুজনই। আর আপনাদের ঠাকরে (উদ্ভব ঠাকরে)।

ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেছেন ভারতীয় ফ্যাক্টচেকার মোহাম্মদ জুবায়ের। এর সত্যতা যাচাই করেছে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাও।

জানা যায়, জয়পুর থেকে মুম্বাইগামী ট্রেনটি মহারাষ্ট্রের পালঘর স্টেশন পেরোনোর পর আচমকা এক আরপিএফ কর্মী নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। এতে আরপিএফ এএসআই টিকা রাম মীনা এবং তিন যাত্রী নিহত হন, যাদের মধ্যে দুজন ছিলেন মুসলিম।

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত চেতন সিং ভারতের যে তিন নেতার নাম নিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী বলে পরিচিত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, চেতন সিং তার বন্দুক থেকে এএসআই টিকা রাম ও এক যাত্রীর ওপর ১২ রাউন্ড গুলি করেন। এরপর অন্য দুটি পৃথক বগিতে গিয়ে আরও দুই যাত্রীকে হত্যা করেন।

নিহত যাত্রীদের মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন ৬৪ বছর বয়সী আব্দুল কাদের ও ৪৮ বছর বয়সী চুড়িবিক্রেতা আসগর আব্বাস আলী। তৃতীয় ব্যক্তির পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, চেতন সিং তার জ্যেষ্ঠ সহকর্মী টিকা রামের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে নিজের বন্দুক থেকে গুলি করতে শুরু করেন।

হত্যাকাণ্ডের পর মুম্বাইয়ের বরিভালি স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে যান অভিযুক্ত আরপিএফ সদস্য। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টার সময় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রেলওয়ে পুলিশ কমিশনার রবীন্দ্র শিসভে বলেছেন, গুলি চালানোর উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয়। কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

তবে এই ঘটনাকে ‘ঠান্ডা মাথার হত্যাযজ্ঞ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ। এক টুইটে তিনি বলেছেন, ঘৃণার জিন বোতলের বাইরে বেরিয়ে গেছে এবং সেটিকে ফিরিয়ে আনতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।

এছাড়া, নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ও সহিংসতা’ ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রমেশের দাবি, বিজেপির শীর্ষ নেতারা ‘ভারতের সামাজিক কাঠামোর ক্ষতি করে চলেছেন’।

সূত্র: আল-জাজিরা

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে