প্রকাশিত : ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৮

বাজারে বিক্রি হওয়া গোলাপজল–কেওড়া জলে কিডনি ডায়ালাইসিসের রাসায়নিক!

খাদ্যে ব্যবহার করা সুগন্ধিতে বিপজ্জনক রাসায়নিক; উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশ
চাঁদনী ডিজিটাল ডেস্কঃ
বাজারে বিক্রি হওয়া গোলাপজল–কেওড়া জলে কিডনি ডায়ালাইসিসের রাসায়নিক!

 

বাজারে বিক্রি হওয়া গোলাপজল ও কেওড়া জল নামের সুগন্ধি পণ্যে কিডনি ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত বিপজ্জনক রাসায়নিক পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সাম্প্রতিক মোবাইল কোর্ট অভিযানে এ তথ্য উঠে এসেছে, যা সাধারণ ভোক্তা ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বিএফএসএ জানায়, বাজারে থাকা অনেক গোলাপজল ও কেওড়া জল খাদ্যে ব্যবহারযোগ্য বলে লেবেল করা হলেও বাস্তবে এসব সুগন্ধিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত রয়েছে।

এসব পণ্যের লেবেলে ‘খাবার উপযোগী’, ‘ফুড গ্রেড’, ‘ভেজিটেরিয়ান’ ইত্যাদি দাবির পরও এগুলোতে খাদ্যমান–অঅনুমোদিত উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে—যা নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

কারখানায় পাওয়া গেল ডায়ালাইসিস কেমিক্যাল

মোবাইল কোর্টের অভিযানে উৎপাদনকারীদের কারখানা থেকে এমন রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়, যা কিডনি ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই রাসায়নিক খাদ্যের জন্য অনুমোদিত নয় এবং মানবদেহে তা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

উপাদান সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য

বাজারে পাওয়া গোলাপজল–কেওড়া জলের বোতলে সাধারণত ‘বিশুদ্ধ পানি’ ও ‘ফ্লেভার’ লেখা থাকে। তবে কোন রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে—এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্বচ্ছতা ইচ্ছাকৃত এবং প্রতারণামূলক।

 

নিরাপদ খাদ্য আইন লঙ্ঘন

বিএফএসএ জানিয়েছে—
যে কোনো খাদ্য সুগন্ধির লেবেলে ‘অনুমোদিত প্রাকৃতিক/কৃত্রিম সুগন্ধি’ এবং ব্যবহৃত উপাদানের সাধারণ নাম বা আইএনএস নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক।

এ নিয়ম না মানলে তা নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩-এর ২৭ ও ৩২ ধারার লঙ্ঘন।

 

উৎপাদন ও বিপণন বন্ধের নির্দেশ

বিএফএসএ সকল ব্যবসায়ী ও প্রস্তুতকারীকে নির্দেশ দিয়েছে—
গোলাপজল বা কেওড়া জল নামে এসব পণ্য খাদ্যে ব্যবহার না করতে এবং উৎপাদন–বিপণন তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে।

 

খাদ্য প্রস্তুতকারীদের জন্য সতর্কতা

রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান, বেকারি, ক্যাটারিং সার্ভিসসহ সকল খাদ্য প্রস্তুতকারীকে সতর্ক করা হয়েছে—

শুধুমাত্র যথাযথ লেবেলিং ও অনুমোদিত ফুড–গ্রেড সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে

অননুমোদিত সুগন্ধি ব্যবহারে জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে

 

সাধারণ ভোক্তাদের জন্য পরামর্শ

বিএফএসএ বলেছে—

গোলাপজল বা কেওড়া জল কিনতে হলে লেবেলে উপাদানের বিস্তারিত তথ্য আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে

লেবেল অস্পষ্ট, বিভ্রান্তিকর বা অসম্পূর্ণ হলে তা কখনো খাদ্যে ব্যবহার করা যাবে না

 

সতর্কবার্তা

খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় ভোক্তা, ব্যবসায়ী ও উৎপাদক—সকল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। অননুমোদিত সুগন্ধি মানবস্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

উপরে