বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন জিয়া : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী
‘দরখাস্ত করে’ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের(বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মোজাম্মেল হক বলেন, “তিনি (জিয়া) দরখাস্ত করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন। সেনাপ্রধানসহ অন্যান্যরা অটোমেটিক্যালি হয়েছিল। তিনি আবেদন করে বলেছেন যে আমি সেবা করার সুযোগ চাই। অথচ বঙ্গবন্ধু হত্যার এক মাসের মাথায় তিনি বললেন, বাকশাল শব্দটা একটা গালি।”
গতকাল সোমবার রাতে মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ এই সদস্য তৌফিক ইমরোজ খালিদী লাইভ অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের এই তথ্য তুলে ধরেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, “জিয়া ক্ষমতা নিয়ে সংবিধান সংশোধন করে ইসলামী দলকে বৈধতা দিলেন, জামায়াতে ইসলামকে বৈধতা দিলেন। এই যে বলা হয়, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন... বহুদলীয় অর্থ জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি করার অধিকারটা নিশ্চিত করলেন। এটাই হলো তার তথাকথিত বহুদলীয় গণতন্ত্র। তিনি যে ভাবধারায় দেশকে পরিচালিত করেছেন, সেটা ধর্মভিত্তিক ভাবধারা।”
মোজাম্মেল হক বলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক হলেও ধর্মীয় কাজে জিয়াউর রহমানের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিনি বলেন, “ক্যান্টনমেন্টে (জয়দেবপুর) তখন কোনো মসজিদ ছিল না। নামাজ পড়তে হলে জয়দেবপুর বাজার মসজিদই একমাত্র মসজিদ ছিল। উনি ওখানে তিন বছর অবস্থান করেছেন বোধ হয়, কোনোদিনও তিনি নামাজে গিয়েছেন, আমি অন্ততপক্ষে দেখি নাই। অন্য কোনো মানুষ দেখছে বলে আমার জানা নাই।”
মন্ত্রী বলেন, “জিয়া নির্বাচিত রাজনীতিকদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ছিল।”
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করার জন্য একাত্তরের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলা হয় বলেও মন্তব্য করেন প্রবীণ এই রাজনীতিক । তিনি বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কত লোক মারা গিয়েছে, কেউ কি হিসাব করে দেখিয়েছে? যখন যেটা বলা হয়েছে, সেটাই ধরা যায়। ধরেন এক লাখ যদি মারা যায়, তাহলে সেটা কি যথেষ্ট নয়?”
একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, “আমরা জাতীয় সংসদে ইতোমধ্যে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে ২৫ মার্চকে জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করছি। আমাদের দূতাবাসগুলো চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, “একটা আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস আসে, ওই দিবসের কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নাই। সে জন্য আমরা বলতে চাচ্ছি, ওই তারিখটা পরিবর্তন করে ২৫ মার্চ করা হোক। সেজন্য আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। যখনই জাতিসংঘে আসবে, তখনই ভোটাভুটি হবে।”
এ সময় জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, “জামায়াতের ইসলামের কোনো রাইট নাই... পৃথিবীর কোনো দেশে নাই, যারা ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতার প্রত্যক্ষভাবে বিরোধিতা করে, তারপর তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। আমি মনে করি, তাদেরকে অবশ্যই বাতিল করা উচিত। তাদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করার কথা সংসদে বলেছি। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের বিষয়টি বাস্তবায়নযোগ্য।
এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক অবস্থান দৃঢ় হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা পারব।”