শপথ নিলেন মোকাব্বির খান
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান শপথ গ্রহণ করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনস্থ স্পিকারের দপ্তরে তাকে শপথ পাঠ করান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি। শপথ গ্রহণ শেষে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি শপথ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ সময় তিনি দলের প্যাড চুরির অভিযোগকারী মানসিকভাবে অসুস্থ বলেও দাবি করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আটজন প্রার্থী বিজয়ী হন। এর মধ্যে ছয়জন বিএনপির ও দুজন গণফোরামের। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সুলতান মনসুর মৌলভীবাজার ২ আসন ও মোকাব্বির খান সিলেট ২ আসন থেকে গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু তাদের জোটের ভরাডুবি হওয়ায় নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে তারা শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করেন। গত ৩ জানুয়ারি অন্যান্যদের সঙ্গে তারা শপথ না নিলেও ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন সুলতান মনসুর। বাকি ছয়জন নির্বাচিত সদস্য শপথ না নিলে আগামী ৩০ এপ্রিলের পর তাদের আসন শূন্য হবে।
সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের আগ্রহে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংসদ সচিবালয়। পূর্বনির্ধারিত সময়েই তাকে শপথ পাঠ করান স্পিকার। সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান শপথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এ সময় জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, হুইপ ইকবালুর রহিম, মাহবুব আরা বেগম গিনি ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, আবদুল লতিফ, আবদুস সোবহান গোলাপ ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণ শেষে সংসদের লবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোকাব্বির খান সংসদে শতভাগ বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সংসদে বিরোধীদলীয় ভূমিকা পালন করব। আমি যে সংসদীয় এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছি, সেই এলাকার জনগণের কথা বলব। আমি সারা দেশের মানুষের কথা ভেবে, মানুষের চিন্তা-ভাবনা ও আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
দলের প্যাড চুরির অভিযোগ নাকচ করে একমাত্র গণফোরামের দলীয় প্রতীক নিয়ে বিজয়ী এই এমপি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। আমার মনে হয়, বিশেষ কারো অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন করতে না পেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এটা বলা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি দল থেকে অনুমতি নিয়েই এখানে এসেছি। আমার ৭ মার্চ শপথ নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমার দলের প্রেসিডিয়াম সভার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৭ মার্চ বাদে অন্য যেকোনো দিন শপথ গ্রহণের। তখন সেই দিনও যে প্যাডে যে প্রক্রিয়ায় সংসদে চিঠি দিয়েছিলাম, একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একইভাবে সংসদে চিঠি দিয়ে শপথ গ্রহণ করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির খান বলেন, দেশে তো কত ধরনের অপরাজনীতি হচ্ছে। হয়তো কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, নয়তো অপরাজনীতির মানসিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের ফায়দা হাসিলের জন্য এসব করে যাচ্ছেন। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ সময় তার পাশে থাকা গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মেজর (অব.) আমিন আহমেদ আফসারী দলীয় সিদ্ধান্তের কাগজপত্র সাংবাদিকদের দেখান।