কুলাউড়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী, ভিডিও ধারণ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় এক কিশোরীকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে সাত পাষণ্ড। তারা শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলফোনে ধারণও করেছে। সেই সাথে তারা এই বলেও ওই কিশোরীকে হুঁশিয়ার করেছে, পরবর্তীতে ডাকে সাড়া না দিলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে।
১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে কুলাউড়া হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গণধর্ষণের শিকার কিশোরীর দেওয়া জবানবন্দি থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করে পুলিশ। গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের সহায়তায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নির্যাতিতা ওই কিশোরীর দেওয়া বক্তব্য থেকে জানা যায়, ১৫ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গৌরী শংকর গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে শুকুর আলী মোবাইল ফোনে ওই কিশোরীকে কুলাউড়া পৌরসভার সামনে আসতে বলে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি পৌরসভার সামনে আসলে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিকশায় তোলে। এ সময় সিএনজি অটোরিকশাতে থাকা অপর লোকজন তাকে মুখে রুমাল দিয়ে বেঁধে আছুরীঘাটের নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে সিএনজিচালকসহ সাতজন মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। রাত আনুমানিক ১১টায় মেয়েটিকে ফেরত নিয়ে এসে কুলাউড়া রেলস্টেশনসংলগ্ন এলাকায় ফেলে যায়।
এর পর ওই কিশোরী মুমূর্ষু অবস্থায় নিজ বাসায় ফিরে যায়। তার পরিবার রাত ১২টায় তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। মঙ্গলবার সকালে কুলাউড়া হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নির্যাতিতা মেয়েটি ধর্ষণের বর্ণনা দেয়।
নির্যাতিতা মেয়েটি তার বক্তব্যে জানায়, ধর্ষণকালে দুষ্কৃতকারীরা মোবাইল ফোনে দৃশ্য ধারণ করে রাখে এবং বিষয়টি কাউকে না বলার হুমকি দেয়। এরপর দুষ্কৃকারীদের ডাকে সাড়া না দিলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। নির্যাতিতা মেয়েটি কেবল শুকুর আলী চিনতে পেরেছে।
কিশোরীর ছোট ভাই কালের কণ্ঠকে জানান, তার বোন সিলেটের একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে। পহেলা বৈশাখের দুই দিন আগে সে কুলাউড়ার পরিনগরস্থ বাসায় আসে। সোমবার সন্ধ্যায় সাদিপুরস্থ গ্রামের বাড়িতে যাবার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে রাত ১১টায় কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফেরে।
ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার আমানউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘটনা জানার পর আমি বিষয়টি কুলাউড়া থানা পুলিশকে অবহিত করি এবং নির্যাতিতার বক্তব্য গ্রহণ করি। মেয়েটি দরিদ্র পরিবারের। যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি মেয়েটিকে শারীরিকভাবেও অনেক নির্যাতন করা হয়েছে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে কুলাউড়া থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সন্দেহজনক একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দ্রুত ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।