প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল, ২০১৯ ১৮:২৫

ওয়াসার এমডিকে ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াবেন জুরাইনের মিজানুর

অনলাইন ডেস্ক
ওয়াসার এমডিকে ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াবেন জুরাইনের মিজানুর

কিছুদিন আগে 'ওয়াসার পানি শতভাগ বিশুদ্ধ এবং সুপেয়' বলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। বাস্তবে ওয়াসার পানি সবসময়ই নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত এবং পুরোপুরি দূষিত। যে কারণে এমডির এমন মন্তব্যে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। যার ধারাবাহিকতায় এবার তাকসিম খানকে 'ওয়াসার শতভাগ বিশুদ্ধ পানি'র শরবত (!) খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা।

সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমে এ কর্মসূচির বার্তা পাঠান মিজানুর রহমান নামে জুরাইন এলাকার এক বাসিন্দা। তার উদ্যোগে ২০১২ সালে জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করা হয়েছিল। তাতে কাজ হয়নি। এবারের কর্মসূচি অনুযায়ী ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের উদ্যোগে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তারা কারওয়ানবাজারে অবস্থিত সংস্থাটির ভবনে গিয়ে ওয়াসার পানির শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানো হবে। এ উপলক্ষে জুরাইন রেলগেটে সকাল ৯টায় জমায়েতের আহ্বান জানানো হয়েছে।

কালের কণ্ঠকে মিজানুর রহমান বলেন, 'আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধ ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হয়নি। এখনো প্রতিদিন ময়লা পানি আসে। আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। আর মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন. তা আমাদের বোধগম্য হয়নি।'

কর্মসূচি নিয়ে মিজানুর রহমানের বক্তব্য, 'আমরা যারা একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে যাই, তাদের অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা আগামীকাল ওয়াসা ভবনে গিয়ে এমডির জন্য ওয়াসার বিভিন্ন কলের পানি নিয়ে যাব। যদি তার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে শুধু লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়াব। তিনি খেয়ে বলবেন, পানি কতটুকু সুপেয়। কেউ যদি নাও আসে তবে আমি একাই যাব। আমার স্ত্রীও যাবে আমার সঙ্গে।'

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) উদ্যোগে 'ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করে। যাতে ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।

এরপর গত ২০ এপ্রিল টিআইবির প্রতিবেদনের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াসার এমডি তাকসিম খান বলেন, 'ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। একে ফুটিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।' টিআইবির ওই প্রতিবেদনে ওয়াসার ব্যাপক দুর্নীতির কথা উঠে এসেছে। এদিক ইঙ্গিত করে তিনি টিআইবির রিপোর্টকে 'নিম্মমানের' বলে অভিহিত করেন।

উপরে