প্রকাশিত : ৭ আগস্ট, ২০২০ ১৭:৩৭

গরুর খামারীদের মাথায় হাত কাউনিয়ায় গো খাদ্যের দাম আকাশচুম্বি

সারওয়ার আলম মুকুল,কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
গরুর খামারীদের মাথায় হাত
কাউনিয়ায় গো খাদ্যের দাম আকাশচুম্বি

রংপুরের কাউনিায় উপজেলায় গরুর খামারীদের মাথায় হাত, বর্তমানে গো-খাদ্য খরসহ অনান্য থাদ্যর দাম আকাশ ছোঁয়া। করোনার প্রভাবে এমনিতেই খামারীদের বেহাল অবস্থা তার উপর গো খাদ্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে খামরীদের খামার বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা। সরেজমিনে বিভিন্ন হাটবাজার ও খামার ঘুরে দেখা গেছে অনেক খামারী কোন চাকরী না পেয়ে আশায় বুক বেধে গরুর খামার শুরু করেছে, শুরুতে ভালই চলছিল খামার কিন্তু বর্তমানে একদিকে করোনা অন্য দিকে খর সহ বিভিন্ন গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা ভাবছে খামার বন্ধ করে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাওয়ার। কাউনিয়া তকিপল হাট ও খানসামা হাটে গিয়ে দেখা গেছে গত বছর এসময়ে মাঝাড়ী আকারের ধানের আটি (খর) এর দাম ছিলো ৩’শ টাকা শ’ অর্থাৎ ১ হাজার ধানের আটির দাম ৩ হাজার টাকা।

বর্তমানে প্রতি হাজার ধানের আটি (খর) বিক্রয় হচ্ছে ৭ থেকে ৮হাজার টাকায়। অন্য দিকে ভুসি ও ঔষদের দামও দ্বিগুন বেরেছে। খরের দাম দ্বিগুন হওয়ায় অনেকেই খর না কিনেই বাড়ী ফিরছেন। হাটে খর কিনতে আসা নিজপাড়া গ্রামের আশরাফুল পুর্বচান্দঘাট গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান ধানের খরের এতো দাম যে গরু পোষা দুরহ হয়েযাচ্ছে। তার দুইটি গরু বর্গা (আদি) নিয়ে লালন পালন করছে, কোরবানী ঈদে বিক্রি করতে চয়েছিল দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেনি। তার অনেক আশা ছিলো গরু গুলোকে একটু স্বাস্থবান করে বকরী ঈদে (ঈদুল আজহা) সময় বিক্রয় করে বার্তি কিছু আয় করার সে আশা ভেস্তে গেছে। বর্তমানে গরুর খাবারের যে দাম তাতে সেটা আর হবে না, এখনই গরু দুটি বিক্রয় করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। গংগা নারায়ন গ্রামের গরুর খামারী জয়নাল ২হাজার ধানের আটি (খর) কিনেছে ১৩ হাজার ৫শ টাকায়। তিনি জানান দাম যাই হোক তার খামারে ১৭টি গরুর খাবার তাকে কিনতেই হবে। তা না হলে গরু গুলো বাচাঁন যাবে না।

অন্য খামারী বনগ্রামে গোপাল চন্দ্র জানান বন্যা ও বৃষ্টির কারনে ধানের খর অনেকে শুকাতে পানে নি, এছারা খর অন্য জেলায় চলে যাচ্ছে ফলে ধানের খরের দাম এতো বেশী, দাম বেশী হলেও খামার রক্ষা করতে বেশী দামে খর কিনতে বাধ্য হচ্ছে। খামারীরা জানায় গরুকে শুধু রাসায়নিক খাবার যেমন ভূসি, ভুট্রার গুড়া, বিদেশী ঘাস খাওয়ালে গরু সুস্থ থাকেনা। আমাদের দেশের গরুর জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজনীয় খাবার হলো ধানের খর। খরের সাথে ভুসি মিশিয়ে খাওয়ালে গরুর স্বাস্থ্য ও দুধ ভাল পাওয়া যায়। ধানের খর ব্যবসায়ী সাইফুল ও হযরত জানান ভরা মৌসুমে তারা গৃহস্থ বাড়ী থেকে প্রতি হাজার ধানের আটি ২হাজার টাকা করে কিনে রেখেছেন, বর্তমানে তারা সেই ধানের আটি ৫-৭ হাজার টাকা দরে বিক্রয় করছেন। এবছর তাদের ব্যবসা ভালই হচ্ছে।

ঢুসমারা চরের আবাদের খর বিক্রয় করতে আসা কালাম জানান, ধানের আটি রাখা বর্তমানে খুবই সমস্য, ইদুরের কারনে রাখা যায় না। ধানের আটি ইদুর কেটে ফেলে। তবে এবছর মাচা করে কিছু ধানের আটি রাখায় তা ভাল দামে বিক্রয় করতে পারলাম। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার সরকার জানান গো-খাদ্যোর দাম বৃদ্ধিপাওয়ায় খামারীদের বেশ আসুবিধা হচ্ছে। গরুর খামারীদের জন্য সরকারের পর্যাপ্ত প্রনদনা প্রয়োজন। গরু খামারীরা মনে করছেন দুধ এবং মাংসের চাহিদা পুরনে খামারীদের কৃষি প্রনদনার আওতায় আনাসহ মৌসুমে সরকারী ভাবে খর সংগ্রহ করে পরবর্তিতে তা খামারীসহ গরু পালন কারীদের মাঝে বিতরণ করার ব্যবস্থা করা। সেই সাথে কৃষি ঋণ সহজশর্তে প্রদান করা।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে