রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
দেশজুড়ে বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর চার আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান আজ (বুধবার) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলার ৭ নম্বর আসামি ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী মিন্নি এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৮ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
তারা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন। অপর এক আসামি মুসা পলাতক রয়েছেন।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ গতকাল মঙ্গলবার বলেন, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন, এটাই প্রমাণ হোক। রাষ্ট্র বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে দেশবাসীকে জানিয়ে দিক, অপরাধ করে কেউ বাঁচতে পারে না। মিন্নিসহ সব আসামির শাস্তি চাই আমরা।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়। ঘটনার পরদিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুইভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক।
রায় ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় তিনস্তরের কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আদালত প্রাঙ্গণ, প্রবেশপথ ও আশপাশের এলাকায় কড়া পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। আদালতের ভেতরে সাদা পোশাক ও ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।
নিরাপত্তাবেষ্টনী অতিক্রম করে আদালতে প্রবেশ করেন বিচারপ্রার্থীসহ সাংবাদিকরা। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও টহল দিচ্ছে বরগুনায়। এ ব্যাপারে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী বলেন, মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালতের আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন