মার্চে তিন কোটি নাগরিককে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা কানাডার
কানাডায় গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে করোনা টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। এরই মধ্যে দেশটিতে ফাইজার ও মর্ডানার টিকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদনও দিতে যাচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
হেলথ কানাডা সূত্রে জানা গেছে, কানাডায় প্রথমে টিকা পেয়েছেন সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, কেয়ার হোমের বাসিন্দা ও কর্মীরা। আগামী মার্চের শেষ নাগাদ তিন কোটি নাগরিককে টিকার আওতায় আনবে কানাডা। জুনের শেষে টিকা পাবে আরও এক কোটি কানাডিয়ান। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে যে কেউ চাইলেই টিকা নিতে পারবে।
হেলথ কানাডার প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা এরিক মরিসেটে জানিয়েছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবেদনটি পর্যালোচনা করছে একটি কমিটি। এখন তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে উৎপাদন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা গেছে, টিকা ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে কানাডায় প্রথম আবেদন করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। শুক্রবার পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো ও ভারতে অনুমোদন পেয়েছে।
হেলথ কানাডার প্রধান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সুপ্রিয়া শর্মা জানিয়েছিলেন, ট্রায়ালে কিছু স্বেচ্ছাসেবক অ্যাস্ট্রাজেনেকার অর্ধেক ডোজ টিকা নেয়ায় এটি পর্যালোচনা করা কিছুটা জটিল।
জনসন অ্যান্ড জনসন তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল ঘোষণার পর চতুর্থ ভ্যাকসিন অনুমোদনের বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। সিঙ্গেল ডোজের ভ্যাকসিনটির অনুমোদন চেয়ে গত ৩০ নভেম্বর হেলথ কানাডার কাছে আবেদন জমা দেয় জনসন অ্যান্ড জনসন।
হেলথ কানাডা সর্বপ্রথম অর্থাৎ ৯ ডিসেম্বর ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়। এর কিছুদিন পর ২৩ ডিসেম্বর অনুমোদন দেয় মডার্নার ভ্যাকসিন। উভয় ক্ষেত্রেই তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশের তিন সপ্তাহ পর অনুমোদন দেয় হেলথ কানাডা।
কলামিস্ট, উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান জানান, মানুষের জীবন আর অর্থনৈতিক সুরক্ষায় কোভিড-১৯ এর শুরু থেকেই জাস্টিন ট্রুডোর সরকার আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও এনিয়ে প্রশান্তি রয়েছে। কিন্তু টিকা প্রাপ্তির বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন। কানাডার বাইরে উৎপাদিত টিকা উৎপাদনকারী দেশের যেমন অগ্রাধিকার আছে, তার সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কুটনীতি। আমেরিকা ও কানাডায় সম্মুখসারির যোদ্ধারা একই দিনে টিকাপ্রাপ্তি শুরু হলেও কানাডাতে সাধারণ পর্যায়ে এখনও আসেনি। মার্চের মধ্যে তিন কোটি মানুষ টিকা পাওয়ার ঘোষণা প্রশান্তির নিয়ে আসবে।
অন্যদিকে কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ অন্টারিও, বৃটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেকে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ সরকারি বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া সত্ত্বেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ২০ হাজার ৩০৬ জন। মারা গেছেন ২১ হাজার ১৬২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬২ হাজার ২০০ জন।