প্রকাশিত : ৮ মার্চ, ২০২১ ১৫:৫৯

কাগজে কলমে সমান মজুরি, বাস্তবে কম পান রাজিয়ারা

অনলাইন ডেস্ক
কাগজে কলমে সমান মজুরি, বাস্তবে কম পান রাজিয়ারা

রাজধানীর আজিমপুরে প্রতিদিন ভোরে দিনমজুরের হাট বসে। পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা লাইন ধরে কাজ পাওয়ার আশায় বসে থাকেন। তাদেরই একজন রাজধানীর কামরাঙ্গিরচরের বাসিন্দা রাজিয়া। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে উঠে তড়িঘড়ি করে রাতেই রান্না করে রাখা খাবার প্লাষ্টিকের বাটিতে ভরে হেঁটে আজিমপুর আসেন। স্থানীয় এক সর্দারের মাধ্যমে কাজ জুটলেও দিনশেষে পুরুষের সমান মজুরি পান না।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রাজিয়া বলেন, কাগজে কলমে পুরুষের সমান দৈনিক ৮০০ টাকা মজুরি পেয়েছেন বলে স্বাক্ষর করলেও বাস্তবে হাতে টাকা পান ৬০০ টাকা। গায়ে শক্তি কম, ভারি কাজ করতে বিলম্ব হয় এ অজুহাতে কম মজুরি দেন সর্দার। সর্দারকে ছাড়া কাজও পান না। এ কারণে ৬০০ টাকা পেয়েই তাকে সন্তুুষ্ট থাকতে হচ্ছে। তার সঙ্গে একই সুরে পুরুষের তুলনায় কম মজুরি পাওয়ার কথা জানালেন সালমা, রিপা, হেনা, সাহেরা, বিন্দুসহ আরও কয়েকজন নারী দিনমজুর।

আজ আন্তজার্তিক নারী দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’। রাষ্ট্র পরিচালনার শীর্ষ পদ থেকে শুরু করে সর্বত্রই নারীরা একটু একটু করে এগুলেও সাধারণ দিনমজুর নারীরা ন্যায্য মজুরী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অসহায় দরিদ্র নারী দিনমজুররা দিনভর রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করলেও কথিত সর্দারদের কমিশন কেটে নেয়ার কারণে তারা মজুরি কম পান।

আন্তজার্তিক নারী দিবসের আজকের এই দিনে আজিমপুর বাসষ্ট্যান্ডের অদূরে দিনমজুরের এ হাটে কাজ পাওয়ার জন্য অপেক্ষমান সালমা বেগম নামে একজন নারী শ্রমিক জানান, গত এক বছর বিশেষ করে করোনার কারণে লকডাউন থাকার সময় ছেলেমেয়ে নিয়ে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আয় রোজগার না থাকায় বাসা ভাড়া বাকি পড়ে। বাড়িওয়ালা বাসা ছেড়ে দিতে নোটিশ দিয়েছে। এক পর্যায়ে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হই। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর আবার ঢাকায় ফিরে আসলেও আগের মতো কাজ পাই না। আর কাজ পেলেও দিন শেষে মজুরি কম।

হেনা বেগম নামে আরেকজন দিনমজুর এ প্রতিবেদককে মজুরি নিয়ে কথা বলতে শুনে এগিয়ে এসে বলেন, প্রতি বছরই সাংবাদিকরা এসে নানা কথা জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু সমাধান তো কিছু হয় না। আমরা নারী বলেই মজুরি কম পাব, এটাই নিয়তি।

এ কথা বলেই তিনি অন্যান্যদের হাত ধরে টেনে সামনে এগিয়ে যান।

দৈনিক চাঁদনী বাজার  / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে