প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০২২ ১৭:০৭

অনার্স ভর্তিতে জিপিএ বৃদ্ধি: আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক
অনার্স ভর্তিতে জিপিএ বৃদ্ধি: আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি আবেদনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন যোগ্যতা জিপিএ-৩ দশমিক ৫ করা হয়েছে। আগে কম থাকলেও এবার তা বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নতুন নিয়ম বাতিলের দাবিতে গত তিন দিন ধরে ভর্তিচ্ছুরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন শুরু করেছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদনে জিপিএ বাড়ানোয় কম জিপিএ প্রাপ্তরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এটি বাতিলে তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সারাদেশে বড় ধরনের আন্দোলন শুরু করা হবে।

মিরপুরে বসবাসকারী মো. রিফাত হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আমার এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ ৩ দশমিক ০৬ এবং এইচএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ ৪ দশমিক ৪২। ফলে আমি ভর্তি আবেদনের সুযোগ পাব না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন করতে না পারায় আমার স্নাতকে পড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। কেননা এই জিপিএ দিয়ে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন করতে পারব না।

আরেক শিক্ষার্থী জুম্মন আহমেদ জয় বলেন, জিপিএ বাড়ানোয় হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গের পথে। অনেকের স্বপ্ন ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু জিপিএ কন্ডিশনের কারণে অনেকে আবেদন করতে পারবে না। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্নের কথা বিবেচনা করে জিপিএ’র শর্ত কমানো উচিত।

ইমন আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদনের যোগ্যতায় বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত বছর মানবিকের ক্ষেত্রে এসএসসিতে জিপিএ ২ দশমিক ৫ পেলেই আবেদন করা যেত। এবার এক লাফে সেটি ৩ দশমিক ৫ করা হয়েছে। এর পরিবর্তন দাবি করেন তিনি। তাদের দাবি মানা না হলে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন শুরু করবেন।

গত বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মানবিক শাখায় আবেদনের যোগ্যতা রাখা হয়েছে এসএসসিতে ৩ দশমিক ৫ ও এইচএসসিতে ৩। আর ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এসএসসি ও এইচএসসিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৩ দশমিক ৫ পেলে তারা আবেদন করার যোগ্য হবেন।

জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিন (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি কলেজে অর্নাস প্রথম বর্ষে ৩ লাখ ৯৩ হাজার সিটে ভর্তিতে প্রায় ৬-৭ লাখ আবেদন আসে। অনার্সে কিছুটা কোয়ালিটি (মান) বাড়াতে এবার জিপিএ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা চাই যাদের ফল ভালো তারাই অর্নাস পড়ার সুযোগ পাক। সেই চিন্তা থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় জিপিএ বৃদ্ধির অনুমোদন হয়েছে। তবে ভালো ফলধারীরা ভালো কলেজে সুযোগ পেয়ে যায়। বাকিরা মফস্বল পর্যায়ে সুযোগ পেয়ে থাকে। আগামী ৩ জুলাই থেকে অর্নাসের ক্লাস শুরু হবে। এর আগে চার ধাপে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষার মান ও গুরুত্ব বাড়াতে ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে জিপিএ পয়েন্ট বাড়িয়েছি। এটি কলেজ শিক্ষকদের দাবি ছিল। যারা অনার্সে ভর্তি হতে পারবে না তাদের জন্য ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকছে। তার পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন ধরনের কারিগরি কোর্স চালু করতে যাচ্ছি। ডিগ্রিতে পড়ে সেসব কোর্সে ভর্তি হতে পারবে।

তিনি বলেন, অনেকে অনার্স করে বেকার থাকছে, চাকরির সুযোগ পাচ্ছে না। তাই যাদের জিপিএ পয়েন্ট বেশি তারাই অনার্স করুক। বিষয়টি না বুঝে কেউ কেউ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে