প্রকাশিত : ২ জুন, ২০২২ ১১:৪৬

জামিনে বাড়ি ফিরে পরিবারের ৫ জনের মরদেহ দেখে হতবাক ইসলাম

অনলাইন ডেস্ক
জামিনে বাড়ি ফিরে পরিবারের ৫ জনের মরদেহ দেখে হতবাক ইসলাম

 

অস্ত্র মামলায় কারাগারে ছেলে। কোর্টের মাধ্যমে জামিনে মুক্ত হবেন বুধবার (১ জুন)। তাই পরিবারের অন্য ছেলে, মেয়ে ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে ছেলে ইসলাম মন্ডলকে নিতে যান। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় মরদেহ হয়ে বাড়ি ফেরেন মা মসিরন বিবিসহ (৬০) পরিবারের ৫ সদস্য।

এ ঘটনায় আরও নিহত হন অটোরিকশার চালক নাসির। হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে মাসহ পরিবারের ৫ সদস্যের মরদেহ পান ছেলে ইসলাম মন্ডল। এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ তিনি। কারও সঙ্গে তেমন কথাও বলছেন না ইসলাম।

বুধবার (১ জুন) সকাল পৌনে ৯টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কালুখালী চাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের সামনের সড়কে ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালকসহ ৩ জন এবং কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২ জন শিশু, ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ।

এছাড়া আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় দুইজনকে। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মর্জিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন, রাজবাড়ীর পাংশার পাট্টা ইউপির পুইজোর গ্রামের কৃষক মোতালেব মন্ডলের স্ত্রী মসিরন নেছা ( ৬০), মেয়ে মরিয়ম (৪০), মিরিয়মের মেয়ে শিলা (১৮), মোতালেবের নাতি ইউসুফ আলী (৫) ও নয়ন (৮) এবং প্রতিবেশী বসিরউদ্দিন মিয়ার ছেলে অটোরিকশার চালক নাসির (৩২)।

আহতরা হলেন, কৃষক মোতালেব মন্ডলের ছেলে আহম্মদ মন্ডল (৩৮) ও মেয়ে মর্জিনা (৩৫)।

প্রতিবেশী নুরুজ্জামান শীতল জানান, মোতালেব মন্ডলের এক ছেলে কারাগারে আছেন। বুধবার তার মামলার তারিখ ছিল। মূলত ওই ছেলের সঙ্গে দেখা করতেই প্রতিবেশী নাসিরের অটোরিকশা নিয়ে মোতালেব মন্ডলের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও নাতি-নাতনিরা কোর্টে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথিমধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনায় তাদের ৫ জনের মরদেহ ফিরলো বাড়িতে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিকেলে থানা থেকে মরদেহ এনে দাফন করেছেন স্বজনরা।

কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বজনদের দাবির প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন। তাদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেলার হুমায়ুন কবির খান বলেন, ইসলাম নামে এক হাজতি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে একটি অস্ত্র মামলায় কারাগারে ছিলেন। বুধবার ওই মামলার তারিখ থাকায় আইন অনুযায়ী তাকে কোর্টে ওঠানো হয় এবং সে জামিন পায়। পরবর্তীতে বিকেল সোয়া তিনটার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে