প্রকাশিত : ২ জুন, ২০২২ ১১:৪৮

গঠনমূলকভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক
গঠনমূলকভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পদ্মা সেতু উদ্বোধন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ষড়যন্ত্রের মাঠে অনেকে সক্রিয় উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাজনীতির মাঠে কেউ কেউ লাশ চায়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিতে হবে। কেউ যেন সুযোগ না নিতে পারে।

বুধবার (১ জুন) গণভবনে উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন নির্দেশনা এসব কথা বলেন। বিকেল সোয়া ৪টায় শুরু হওয়া সভা চলে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত।

দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার এই বৈঠকে দল, দেশ ও সরকারের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধন, আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ও নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়। এগুলো সামনে রেখে দেশি-বিদেশি নানা চক্র ষড়যন্ত্র ও সেসব মোকাবিলার বিষয় আলোচনায় উঠে আসে বলে জানা গেছে।

বৈঠক শেষে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হবে। নেতাকর্মীদের গঠনমূলকভাবে সেসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। অনেকেই এখন রাজনীতির মাঠে লাশ চায়। তাদের সেই স্বার্থ যেন হাসিল না হয় সে বিষয়ে ছাত্রলীগসহ সব সংগঠনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন উপদেষ্টারা। দেশের ষড়যন্ত্র আছে, সেই বিষয়েও দলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে আওয়ামী লীগের এই থিংকট্যাঙ্ক গ্রুপ। ছাত্রলীগকে মানববন্ধনের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার পরামর্শ দিয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন সংকট মোকাবিলার বিষয়ে নেতৃবৃন্দকে সতর্ক থাকতে হবে। গঠনমূলকভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেকে রাজনীতির মাঠে এখন লাশ চায়। ছাত্রলীগকে সতর্কতার সঙ্গে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কেউ আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে সে অবস্থায় প্রতিহত করবো। রাজনৈতিকভাবে আসলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা আর সহিংসতা করলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।

সভার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবিুর রহমান পিতা, জাতীয় চার নেতা, ১৫ আগস্টের শহীদ এবং প্রয়াত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এসময় তাদের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

পরে সূচনা বক্তব্য দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর বিভিন্ন বিষয়ে উপদেষ্টারা নানা পরামর্শ দেন।

সূচনা বক্তব্যে পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির ধোয়া তুলে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস এটা করেছেন শুধু গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদের জন্য। ৭১ বছর বয়স পর্যন্ত ড. ইসনূস বেআইনিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থেকেছেন। এ নিয়ে মামলা করে তিনি হেরে যান। বিশ্বব্যাংক তার কথায় ফান্ড বন্ধ করে দেয়। পরে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করি। কানাডা কোর্ট রায়ে বলেছে, সব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা।

বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৯০ ভাগ উন্নয়ন নিজস্ব অর্থায়নে করছি। পদ্মা সেতু একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সততা ছিল বলেই এই চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছি। নিজের অর্থে সেই সেতু করেছি। ২৫ জুন উদ্বোধন করবো ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থা দুঃখজনক ছিল। কারণ ক্ষমতাতো জনগণের হাতে ছিল না। ক্ষমতা চলে গিয়েছিল সেই মিলিটারি ডিকটেটরদের হাতে। উর্দি পরে ক্ষমতা দখল করতো। যার ফলে দেশের উন্নয়ন না হয়ে তারা তাদের উন্নয়ন করেছে। ১৯/২০ টা ক্যু হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। সেশন জট ছিল। সে অবস্থা থেকে তুলে এনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তৃণমূল পর্যায় থেকে উন্নয়ন করছি। আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আমরা সেটা ভুলে যাই না। প্রতিবার বাজেট ঘোষণার সময় সেই ইশতেহার হাতে নিয়ে কতটুকু অর্জন করতে পারলাম, কতটুকু আমাদের সামনে করতে হবে সেগুলো বিবেচনা করে সেভাবেই বাজেট করি। এবারও তাই করছি।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে