প্রকাশিত : ৬ জুন, ২০২২ ১১:৪৪

পাবনায় চারকোল তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

অনলাইন ডেস্ক
পাবনায় চারকোল তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

পাবনায় বিশেষ ধরনের চুল্লিতে চীনা প্রযুক্তিতে পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন পাউডার বা চারকোল তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৫ জুন) রাত ৮টার দিকে কিউলিন ইন্ড্রাস্ট্রিজ নামের এ কারখানাটিতে আগুন লাগে। কারখানার এক পাশে রাখা পাটখড়ির গুদাম ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানাটি বেড়া উপজেলার কৈটলা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে অবস্থিত।

স্থানীয় বাসিন্দা এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, আগুন লাগার পরও তা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সাভির্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে একঘণ্টা চেষ্টা করে রাত নয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাটখড়ির গুদাম ঘরের চুল্লি থেকে আগুন লাগলেও তাদের নিজস্ব কোনো অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় তা ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাষক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন কারখানা গড়ে উঠেছে। অথচ তাদের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকাটা দুঃখজনক।

কিউলিন ইন্ড্রাস্ট্রিজের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, লোহার তৈরি গোলাকৃতির বিশেষ চুল্লিতে প্রথমে পাটখড়ি ঢোকানো হয়। এরপর আগুন ধরিয়ে চুল্লির মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ চুল্লির পাশেই হঠাৎ আগুন দেখা দেয় এবং তা ছড়িয়ে পড়ে।

বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হুদা রুমন বলে, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বেড়া ও কাশিনাথপুরের দুইটি ইউনিটের কর্মীরা একসঙ্গে কাজ শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকে এ আগুন লেগেছে বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা।

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তারা এখনই বলতে পারছি না। সোমবার সকালে সব দেখে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বুঝতে পারবেন বলে জানান।

বেড়া উপজেলার মানিকনগর গ্রামে ৪ বিঘা জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত কিউলিন ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড ৬ বছর ধরে কার্বন পাউডার উৎপাদনে গেছে। কারাখানায় লোহার তৈরি গোলাকৃতির বিশেষ চুল্লিতে প্রথমে পাটখড়ি ঢোকানো হয়। এরপর আগুন ধরিয়ে চুল্লির মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মুখ বন্ধ অবস্থায় চার থেকে পাঁচদিন রেখে দেওয়ার পরে পোড়া বা ভাজা পাটখড়ি বের করে মেশিনে গুঁড়া করা হয়। এভাবে এ কারখানায় পাটখড়ি পুড়িয়ে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টন কার্বন পাউডার। প্রতি মাসে এ কারখানা থেকে প্রায় একশ টন কার্বন পাউডার উৎপাদন করে রপ্তানি করা হয়।

এই কারখানার শ্রমিকরা পাটখড়ি পুড়িয়ে বা ভেজে সেটাকে ডাস্ট করে প্যাকেটজাত করেন। তাদের কারখানার ডাস্ট চীনের একটি টায়ার কোম্পানিতে রপ্তানি করা হয়। এ ডাস্ট সেখানে গাড়ির টায়ার তৈরি, মোবাইলের ব্যাটারি, বিভিন্ন প্রসাধনী, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধ, কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি, আতশবাজিসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে