প্রকাশিত : ১০ জুন, ২০২২ ১৬:১৪

টিপু হত্যা: ‘শুটার মুসা’র ১৫ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
টিপু হত্যা: ‘শুটার মুসা’র ১৫ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ

রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় গ্রেফতার সুমন শিকদার মুসাকে ১৫ দিনের রিমান্ডে চাইবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ইন্টারপোলের সহযোগিতায় ওমান থেকে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনা মুসাকে পর শুক্রবার (১০ জুন) আদালেতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।

শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, ‘ডাবল মার্ডারের ঘটনায় বগুড়া থেকে গ্রেফতার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। তার সন্ধান পেতে ৬ এপ্রিল পুলিশ সদরদপ্তরের এনসিবি শাখায় যোগাযোগ করা হয়।’

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘পুলিশ সদরদপ্তর ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে। এরমধ্যে ৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে মুসাকে গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।’

ডিবিপ্রধান বলেন, ‘মুসাকে না পেয়ে মামলার তদন্তে হিমশিম খাচ্ছিলাম। তবে এনসিবির মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তায় মুসাকে ওমান থেকে গ্রেফতার করে দেশে আনা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করে ১৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।’

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন তদন্তে কার দায় আছে, কার নেই অথবা কে বাদ বা যুক্ত হবে, সেটি খতিয়ে দেখা হবে। মুসাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আমরা মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, শুটার আকাশের জবানবন্দিতে মুসার নাম আসে। এছাড়া তদন্তে ঘটনায় মুসার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আসছে। মুসাকে যেহেতু রিমান্ডে আনবো, এ মুহূর্তে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না। তবে প্রাথমিকভাবে জেনেছি, মুসা পরিকল্পনায় জড়িত।’

ঘটনার সঙ্গে মোল্লা শামীম নামে একজনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি এসেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে আমরা নিশ্চিত হবো তিনি কোথায় পালিয়েছেন। এছাড়া কীভাবে পালিয়েছেন বিষয়টি তদন্তে করে দেখা হচ্ছে। আগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরকে আবার জিজ্ঞাসাবাদে আনা হবে। তাদেরকে গ্রেফতার মুসার মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর ঘটনার কার কী সংশ্লিষ্টতা, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

গত ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপুকে হত্যা করা হয়। সড়কে যানজটে আটকাপড়ে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

২৫ মার্চ দুপুরে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদি হয়ে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা (নম্বর ১৮) দায়ের করেন। ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেফতার করে ডিবি। যিনি সরাসরি টিপুকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিলেন।

২ এপ্রিল মুসার ভাই সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

র‍্যাব জানায়, চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব, রিয়াজুল হক মিল্কী হত্যার বদলা এবং বোচা বাবু হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওমর ফারুকসহ স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে