প্রকাশিত : ৩ আগস্ট, ২০২২ ১১:৩২

স্বাধীনতার চেতনা অক্ষুন্ন রাখতে গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে: হানিফ

অনলাইন ডেস্ক
স্বাধীনতার চেতনা অক্ষুন্ন রাখতে গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে: হানিফ

কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনা অক্ষুন্ন রাখতে গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিবার্তা২৪ডটনেট'র ১১তম বর্ষপদার্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি এখনো সোচ্চার। তারা দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের বাইরে লন্ডন, আমেরিকা থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশকে এগিয়ে যেতে হলে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, স্বপ্নের বাংলাদেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছে, দুই লাখের বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছে। এই বাংলাদেশকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না, পিছিয়ে থাকতে দিতে পারি না। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী ছিল না, স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি উন্নয়ন দেখলে তাদের কষ্ট হয়। তারা মনেপ্রাণে বাংলাদেশে মন্দা, ব্যর্থতা দেখলে খুশী হয়। তারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছে। এ ধরণের স্বপ্ন জাতির জন্য হতাশাজনক। এসব স্বপ্ন যারা দেখছে জনগণের সামনে তাদের পরিচয় তুলে ধরা গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা প্রয়োজন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঠিক ইতিহাস গণমাধ্যম তুলে ধরবে- এমন প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, আগস্ট মাস জাতীয় শোকের মাস, স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা এই মাসে হারিয়েছিলাম। জাতির পিতাকে হারানোর মাস হিসেবে নয়, আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত মাস হিসেবে বিবেচিত। পৃথিবীর সবচেয়ে কলঙ্কিত ঘটনাটি এই মাসে ১৯৭৫ সালে ঘটেছিলো। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিশ্বাস করি।

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনায় রয়েছে। এই সময়ে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে চরম দরিদ্র ছিলো, যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিলো। দুর্নীতিতে এক নম্বর, সন্ত্রাসীদের চারণভূমি, উগ্রবাদী মৌলবাদের ঘাঁটি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত ছিলো। সেই বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে ঘুরে দাড়িয়েছে।

বাংলাদেশকে বিশ্বের মানুষ উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে দেখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের বাংলাদেশ আজ শান্তির বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পরিচয় দিয়েছে। পুরো বিশ্বে বাংলাদেশ সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগের বাংলাদেশ ভাবার সুযোগ নেই।

হানিফ বলেন, মহামারি করোনার দুই বছরে পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলো। এর ঢেউ লেগেছিলো বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দক্ষতার সাথে সেই সংকট মোকাবেলা করে জীবন জীবিকার সমন্বয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের অস্থিতিশীল অবস্থার দিকে যাচ্ছে। মুদ্রার মান বাড়ছে কমছে, পুরো বিশ্বে ভয়াবহ পরিবেশ। বিদেশি বাজারে ডিজেল, তেল ও গ্যাস অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার লোডশেডিং এর মতো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খরচ কমিয়ে অর্থনীতিতে চাপ কমিয়ে আনা আমাদের লক্ষ্য। এই সময়ে এসে একটি শ্রেণী বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। সঠিকভাবে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরতে পারে।

কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও বিবার্তা২৪ডটনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। জাতি গঠনে সংবাদপত্রের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমে সরকারের দুর্বলতা উঠে আসে। এর পাশাপাশি জাতি সরকারের সফলতাও জানতে পারে। আমরা মনে করি গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ, দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন। বিবার্তা সেই দায়িত্ব গত দশটি বছর পালন করে এসেছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে