প্রকাশিত : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৫৯

ডিসেম্বরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চায় আদানি গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক
ডিসেম্বরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চায় আদানি গ্রুপ

চলমান জ্বালানি সংকট নিরসনে ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করার পরিকল্পনাও রয়েছে। পূর্ব ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে আদানি পাওয়ার। সেখান থেকেই আসছে ডিসেম্বরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করতে পারে আদানি পাওয়ার। যদিও বাংলাদেশে তখন শীত মৌসুম হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলক কম থাকবে।

দিল্লি সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি।

ওই সাক্ষাতের পর ভেরিফায়েড টুইটারে এক পোস্টে গৌতম আদানি জানান, অচিরেই ঝাড়খন্ড রাজ্যে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ১ দশমিক ৬ গিগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হবে। এখান থেকে সরাসরি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রপ্তানি শুরু হবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে ভারতের অবকাঠামো ব্যবহারের লক্ষ্য রয়েছে, তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এ প্রকল্পটি।

ভারতের কয়লা খনি প্রধান অঞ্চল হলেও ঝাড়খন্ডের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে প্রধানত আমদানি করা কয়লা পোড়ানো হবে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের অনুমোদন নথি সূত্রে এমনটাই জানা যায়।

২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় হওয়া সমঝোতার চুক্তির ভিত্তিতে ঝাড়খন্ডের গোড্ডা জেলায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে আদানি পাওয়ার।

চুক্তি মোতাবেক আগামী ২৫ বছর এ কেন্দ্রটি থেকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এ আমদানি শুরুর কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় তা দেরি হয়।

পিডিবির অগ্রগতি প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৪৮ মেগাওয়াট এবং আগামী বছর আরও ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কথা রয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে গ্যাস ও কয়লার দাম বাড়তে থাকে। এতে বহু দেশের মতো বাংলাদেশও জ্বালানি সংকটে পড়ে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজি বা কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ব্যাপক আমদানিনির্ভরতা রয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনও গত কয়েক মাস ধরে ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগের বিষয়ে দিল্লি সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কার্যকরী আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত আলোচনায় মোদী বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সব উন্নয়নশীল দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হচ্ছে। রামপাল মৈত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন বাংলাদেশে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করবে।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে