দাফনের আগে যুবকের মাথায় মিললো গুলির চিহ্ন
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মারুফ হোসেন সায়মন (২৩) নামে এক যুবকের মরদেহ দাফনের আগে মাথায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের রহিমুর দীঘির পাড় তুফান আলী বলির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ১১ সেপ্টেম্বর সকালে মরদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে শনিবার ভোরে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের মুনিয়া পুকুরপাড় খন্ডলের ঘাটা এলাকার সড়কের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নাজিরহাট হাইওয়ে থানা-পুলিশ।
সায়মন ধলই ইউনিয়নের রহিমুর দীঘির পাড় তুফান আলী বলির বাড়ির মো. আব্দুল মালেকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। এর পাশাপাশি তিনি ভাড়ায়চালিত সাউন্ড সিস্টেমের কাজে দৈনিক মজুরিতে কাজ করতেন।
নিহতের বাবা আবদুল মালেক জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন জানিয়ে আমার ছেলের লাশ দেয় পুলিশ। কিন্তু বাড়িতে নিয়ে আমরা মাথায় গুলির চিহ্ন দেখতে পাই। তার মাথার দুইপাশে ফুটা আছে। কেউ আমার ছেলেকে হত্যা করে সড়কের পাশে ফেলে রেখেছিল। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।
নিহতের মামা মো. জসিম জানান, গত শুক্রবার মাগরিবের পর সায়মন মির্জাপুর সরকার হাট বাজারে তার মোবাইল ফোন ঠিক করাবে বলে ঘর থেকে বের হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত ঘরে ফিরে না আসায় তার বাবা ফোন করলে একটু পর বাসায় ফিরবে বলে জানায়। কিন্তু আর ফেরেনি। সকালে লাশ পাওয়া যায়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার ভোররাতে পুলিশ সায়মনের মোবাইল থেকে ফোন করে আমাদের জানায় মুনিয়াপুকুর পাড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। খবর পেয়ে তার বাবা ও স্বজনরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান।
এ সময় পুলিশ দ্রুত মারুফের লাশ দাফন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেন। মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন-কাফনের প্রস্তুতিকালে দেখা যায় মাথায় গুলির চিহ্ন। পরে নিহতের পরিবার মারুফের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য থানা-পুলিশের কাছে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে নাজিরহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. আদিল মাহমুদ বলেন, শনিবার ভোরে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ডিউটি করার সময় সড়কের পাশে মারুফের মরদেহ দেখে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অনেকটা অন্ধকার থাকার কারণে যুবকের মাথার গুলির চিহ্নটি দেখা যায়নি।
‘আমরা ধারণা করেছিলাম সড়ক দুর্ঘটনায় ওই যুবক নিহত হয়েছেন। তখন পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ দাফনে মৌখিকভাবে আমাদের জানায়। তখন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মো. রুহুল আমিন সবুজ জানান, পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন