প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৩:৫০

মানুষ যেন উন্নত চিকিৎসা পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
মানুষ যেন উন্নত চিকিৎসা পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

সরকারি হাসপাতালে স্বল্প খরচে মানুষ যেন উন্নত চিকিৎসাসেবা পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চিকিৎসকদের উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে এখনো চিকিৎসক-নার্সের অভাব দেখা যায়। অনেকেই যেতে চান না। সবাইকে রাজধানীতেই থাকবে হবে এমন নয়। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি চিকিৎসকদের দেখার অনুরোধ করছি। যেন উপজেলা পর্যন্ত মানুষ চিকিৎসাসেবা পায়।

দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এখন গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ঘরে বসে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। তিনি চিকিৎসকদের অনলাইনে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। বেসরকারি খাতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বেসরকারি খাতেও স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে খুব অল্প খরচে চিকিৎসা নিতে আসেন। তারা যেন উন্নত চিকিৎসা পায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠিত অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের বাংলাদেশে আসার সুযোগ করে দিতে হবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের ডাক্তারদের উদার হতে হবে। দরজা বন্ধ করে রাখলে আলো-বাতাস ঢোকে না। এ বিষয়ে বিশেষভাবে ভাববেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক প্রতিষ্ঠিত শিক্ষক রয়েছেন। তাদেরও সামনে আসার সুযোগ করে দেওয়া উচিৎ। তারা যেন তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন। তাদের সঙ্গে কাজ করলে অভিজ্ঞতা বাড়ার সুযোগ হবে। এ বিষয়ে আরও বেশি উদার হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সুপার স্পেসালাইজড হাসপাতাল দেশের চিকিৎসাসেবায় নব দিগন্ত উন্মোচিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এ হাসপাতাল চালু হলে বাংলাদেশের বার্ষিক আনুমানিক ৩৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, চিকিৎসা ও গবেষণার মান উন্নত করতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা অত্যন্ত জরুরি। গবেষণা ছাড়া উৎকর্ষতা অর্জন করা যায় না। তাই এদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় একজন রোগী ডাক্তারের কথায় আশ্বস্ত হলে অর্ধেক রোগ এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। প্রত্যেক ডাক্তারকে আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের দেখতে হবে। গ্রামে যেতে হবে, গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দিতে হবে। রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ মানুষ ডাক্তারদের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখবে এবং সহজেই চিকিৎসাসেবা পাবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বলা হচ্ছে। খাদ্যের জন্য রেশন চালু করছে অনেক উন্নত দেশ। সুতরাং আমাদেরও আরও মিতব্যয়ী হতে হবে।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, আমাদেরও নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সামনে আরও কঠিন সময় আসবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জনাব মো. সাইফুল হাসান বাদল। সম্মানিত অতিথি ছিলেন রিপাবলিক অব কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কিউন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে