প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২২ ১৪:৩২

বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা, মেয়ের বক্তব্য শুনলেন হাইকোর্ট

অনলাইন ডেস্ক
বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা, মেয়ের বক্তব্য শুনলেন হাইকোর্ট

মায়ের সহায়তায় নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে ভুক্তভোগী মেয়ের বক্তব্য শুনেছেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বিচারপতিরা। পরে মেয়ের করা মামলায় জামিন নিতে আসা বাবা আব্দুর রশিদকে আগামী চারদিনের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এসময়ে যেন আসামি পালিয়ে যেতে না পারেন, তা মনিটরিং করার জন্য ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) বলা হয়েছে। এছাড়া একই মামলায় মেয়ের মাকে আগাম জামিন দিয়েছেন আদালত। ওই নারীর দুইটি বাচ্চা থাকায় তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) আসামির আগাম জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ জামিন আবেদন পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অজিউল্লাহ্। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পি।

জানা যায়, আসামিকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে (ওয়ারী) আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। তারা চাপাই নবাবগঞ্জের বাসিন্দা। বর্তমানে তারা ঢাকার জয়কালি মন্দির এলাকায় বসবাস করছেন। গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর ওয়ারী থানায় বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী মেয়ে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার কাজ চলছে। আর মামলা এখন তদন্তাধীন।

আসামি রশিদের আইনজীবী বলেন, এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে ২০১৮ সাল থেকে মেয়েকে তার বাবা ধর্ষণ করে আসছেন। আর বাবাকে সহযোগিতা করছেন তার মা। এ ঘটনায় মেয়ে মায়ের সহযোগিতা চেয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। এজন্য মামলায় তাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন মেয়ের বাবা। আদালত আজ জামিন শুনানিতে দুপুরে ভিকটিমকে হাইকোর্টে হাজির করতে মামলার সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পরে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ভিকটিমকে নিয়ে আদালতে হাজির হন। এরপর বিচারকের খাস কামড়ায় আসামি পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে ভিকটিমের বক্তব্য শুনেন দুই বিচারক।

পরে ভিকটিমের বাবার আগাম জামিন আবেদনের শুনানিতে আদালত প্রথমে বাবাকে শাহবাগ থানায় দিতে চাইলেও পরে চারদিনের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। আর মাকে জামিন দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবার নিপীড়নের শিকার হয় ১৪ বছর বয়সী মেয়ে। ওই সময় ভিকটিমের বাবাকে বিভিন্নভাবে মা সহযোগিতা করতেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মায়ের সহযোগিতা না পেয়ে আইনের আশ্রয় নেয় মেয়েটি।

গত ৩ নভেম্বর ওয়ারী থানায় মামলাটি করা হয়। নারী ও শিশু আইনের ৯(১) গ অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মেয়েটির বিয়ে হয়েছে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়েছে। সেই মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চান মেয়েটির বাবা-মা। আদালতের কাছে বিষয়টি আশ্চর্যজনক লাগায় ভিকটিমকে হাজির হতে বলেন।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে