নতুন স্কুলে ভর্তি না করায় মায়ের ওপর অভিমান করে কিশোরের আত্মহত্যা
রাজধানীর বাড্ডার আনন্দনগরের বড় হাজীবাড়ি এলাকায় গলায় ফাঁস নিয়ে আবু বকর রিফাত (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে বাসায় নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে চাদর জড়িয়ে ফাঁস নেয় সে। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, রিফাত এবার অষ্টম শ্রেণিতে থেকে পাস করে নবম শ্রেণিতে উঠেছে। সে তার মায়ের কাছে দাবি করেছিল, এবার যেন তাকে নতুন আরেকটি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। তবে তার মা তাতে রাজি না হওয়ায় অভিমানে আত্মহত্যা করে সে।
রিফাত বাড্ডা এলাকার জাগরণী কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবার নাম সোহেল রানা। রিফাতের মা রাবেয়া বেগম জাগরণী স্কুলেরই শিক্ষক।
তাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার জোড়খালি গ্রামে। রিফাত তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড্ডার আনন্দনগর হাজীবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
রিফাতের বাবা সোহেল রানা জানান, তিনি রেন্টে কার চালান। তার স্ত্রী বাড্ডার আনন্দনগর এলাকার জাগরণী কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক। তার ছেলে রিফাত ওই স্কুলে এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে। অষ্টম শ্রেণিতে পাস করার পর সে তার মাকে বারবার বলে আসছিল, এবার যেন তাকে নতুন কোনো স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, রিফাতের মা রাজিয়া ছেলেকে জানিয়েছিলেন, তার কাছে এখন এত টাকা নেই। এ স্কুল থেকে ভালো রেজাল্ট করে এসএসসি পাস করলে তাকে এইচএসসিতে ভালো কলেজে ভর্তি করে দেবেন। এতে মায়ের ওপর অভিমান করে রাতে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নেয় রিফাত। সকালে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ বাসা থেকে রিফাতের মরদেহ উদ্ধার করে।
বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে বাড্ডার আনন্দনগর বড় হাজীবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে দরজা ভেঙে স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘খোঁজখবর নিয়ে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্কুলে ভর্তি নিয়ে মায়ের ওপর অভিমান করে ওই ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন