অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুদান দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জটিল এবং ব্যয়বহুল রোগের অর্থ নির্বাহের জন্য বিশেষ মঞ্জুরি হিসেবে বরাদ্দকৃত অর্থ গ্রহণের আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷ নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে৷
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের পরিচালন ও বাজেট শাখার উপসচিব মাহমুদুর রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিচালন বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ মঞ্জুরি হিসেবে বরাদ্দকৃত অর্থ উপযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে বিতরণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি নীতিমালা (সংশোধিত-২০২১) জারি করা হয়েছে।
এ নীতিমালা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সব জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর বিতরণসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তির নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সংযুক্ত/স্বতন্ত্র (অনুদানপ্রাপ্ত/অনুদানবিহীন) এবতেদায়ী মাদরাসা ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি কারিগরি/মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয় এবং পাঠাগারের উন্নয়নকাজের জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অস্বচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথচ প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান ভালো এরূপ প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সংযুক্ত/স্বতন্ত্র (অনুদানপ্রাপ্ত/অনুদানবিহীন) এবতেদায়ী মাদরাসা ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত/এমপিওভুক্ত বেসরকারি কারিগরি/মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী তাদের জটিল ও ব্যয়বহুল রোগ এবং দৈব দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবেন।
সরকারি বা বেসরকারি কারিগরি/মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জটিল ও ব্যয়বহুল রোগ, দৈব দুর্ঘটনা এবং শিক্ষা ব্যয় নির্বাহের জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবে। তবে এ বিশেষ মঞ্জুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, দরিদ্র মেধাবী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এ খাতে মঞ্জুরি/অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যে আগ্রহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি, থেকে ৫ মার্চ তারিখের মধ্যে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের আবেদন ফরম বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
বেসরকারি কারিগরি/মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী/শিক্ষার্থীদের অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে অনুদান প্রাপ্তির আবেদনের সঙ্গে নীতিমালায় উল্লেখিত সুনির্দিষ্ট কারণসহ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সভাপতির প্রত্যয়ন এবং শিক্ষক-কর্মচারী/শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যয়ন আপলোড করতে হবে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে যাবতীয় ব্যয়ের প্রমাণাদিসহ চিকিৎসা সনদ এবং দৈব দুর্ঘটনার স্বপক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রমাণপত্র অবশ্যই আপলোড করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত অর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব নম্বরে প্রদান করা হবে এবং শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীকে স্ব-স্ব মোবাইল নম্বর এবং শিক্ষার্থীকে নিজ/বাবা/মা/অভিভাবকের মোবাইল নম্বর (আবেদনের আগেই মোবাইল নম্বরটি নগদ সিস্টেমে রেজিস্ট্রি করা থাকলে সুবিধাজনক হবে) দিতে হবে।
আবেদনকারী শিক্ষক-কর্মচারীকে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং শিক্ষার্থীদের তাদের জন্মসনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পিতা/মাতা/অভিভাকের জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই আপলোড করতে হবে।
ধারাবাহিকভাবে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী অনুদান পেয়েছে সে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী এ বছর (চলতি ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে) আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদনের যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
নীতিমালায় যা কিছুই থাকুক না কেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ নিজস্ব বিবেচনায় বিশেষ ক্ষেত্রে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী/শিক্ষক-কর্মচারী/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এ খাত থেকে অর্থ মঞ্জুর করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। আবেদনের কোনো হার্ডকপি গ্রহণ করা হবে না।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন