রাষ্ট্রপতি হতে আগ্রহী নই, কেউ প্রস্তাবও দেননি: কাদের
মন্ত্রী হিসেবে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দায়িত্ব অসম্পূর্ণ রেখে এত বড় পদে (রাষ্ট্রপতি) যেতে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো আগ্রহ নেই। কেউ আমাকে প্রস্তাবও দেননি।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো তোড়জোর দেখা যাচ্ছে না- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কখনো তোড়জোড় হয় নাকি? তোড়জোড়ের ব্যাপার নয়, সময়মতো আমরা আমাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করবো। এটা নিয়ম অনুযায়ী হবে। সংসদীয় দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন। তিনিই এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। সময়মতো জানতে পারবেন।
আলোচনায় থাকা রাষ্ট্রপতি প্রার্থীদের মধ্যে আপনিও আছেন- এ বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করলে সেতুমন্ত্রী তিনি বলেন, দেখুন আমি আমার মতামত আগেই বলে ফেলেছি। এটা বার বার বলতে ভালো লাগে না। আমার যদি প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ থাকতো আমি প্রকাশ্যে বলতাম। এখানে হাইড অ্যান্ড সিকের কী প্রয়োজন।
‘রাষ্ট্রপতি পদের যে যোগ্যতা দরকার, এ যোগ্যতা আমার আছে বলে মনে হয় না। এ পদে বসার যোগ্যতা আমার নেই- এ কথা আমি বলেছি। আলোচনা হয়তো হতে পারে। কিন্তু আমি আগ্রহী নই বা আমাকে এ ধরনের কোনো প্রস্তাবও কেউ দেননি। আমি নিজে কাজের মানুষ। দৌড়াদৌড়ি, ছুটাছুটি করি। তৃতীয়বার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি, দলের অনেক কাজ আমার বাকি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়েও অনেক কাজ বাকি। দায়িত্ব অসম্পূর্ণ রেখে এত বড় পদে যাবো- ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো আগ্রহ নেই।’ যোগ করেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেগুলো পালন করাই আমার কর্তব্য। এটাই আমার কমিটমেন্ট, নতুন করে কোনো কমিটমেন্ট দিতে চাই না।
রাজনীতিবিদ, নাকি বাইরে থেকে রাষ্ট্রপতি করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইরে না পলিটিশিয়ান, সেটা তো আমি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। এটা কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে জাপানে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সেই চিঠির বিষয়ে জানতে পেরেছে সরকার। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় দল এবং জিয়াউর রহমান ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি তো সাংবাদিক, আপনিই বলুন জিয়াউর রহমা নির্বাচনের মাধ্যমে নাকি বন্ধুকের নল উঁচিয়ে এসেছেন? এটা সবাই জানে, নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বিএনপি বাংলাদেশের বড় দল, এটা প্রমাণ করার জায়গা কোথায়? প্রমাণ করতে হলে নির্বাচন দরকার। একমাত্র সিলেটে তাদের একজন মেয়র আছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগ জিতেছে। প্রমাণ করবেন কীভাবে, তারা নির্বাচনে আসুক।
নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য বিদেশিদের কাছে তদবির করে বিএনপির লাভ হয়নি মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ডোনাল্ড লু এসে কথাবার্তা বলবেন, ওনাদের আশার বাণী শোনাবেন, সেটাও হয়নি। তাহলে এখন আর কী, কোন আশায় বসে আছে?
‘বেদনার বালুচরে কোন আশায় বাঁধিয়াছি ঘর- ফখরুল সাহেবের এখন এ অবস্থা।’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
উপ-নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই উপ-নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কম। কারণ এটা দিয়ে খুব বেশি লাভ-ক্ষতি কেউ খুঁজে পায় না।’উপ-নির্বাচনে ছয়টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে। সেখানে ২৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ চাই। আমরা চাই না ফাঁকা মাঠে গোল দিতে। এটা হওয়া উচিত নয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।
আশুগঞ্জ-সরাইলে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নামলেন, এটা বিএনপিকে ভোটে আনতে আওয়ামী লীগের টোপ কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো কিছু নেই। তবে রাজনীতি একটা কৌশলগত বিষয়, নির্বাচনও কৌশলগত বিষয়। তা না হলে তো জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের আদর্শগত মিল নেই, তারপরও তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স করলাম কেন? এগুলো স্ট্র্যাটেজির বিষয়, রাজনৈতিক কৌশল।
বলা হচ্ছে বগুড়ায় হিরো আলমকে সরকার হারিয়ে দিয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বগুড়ায় যার (হিরো আলম) কথা বলছিলেন, অহেতুক আমি আর বিতর্কে যেতে চাই না। বিএনপি একটা উদ্দেশ্য নিয়ে যা করেছে, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি, এটুকুই বলতে পারি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন