প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১৭:৪০

প্রাথমিকে বৃত্তি পেল ৮২ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী

অনলাইন ডেস্ক
প্রাথমিকে বৃত্তি পেল ৮২ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী

প্রকাশ করা হয়েছে প্রাথমিক বৃত্তির ফল। এতে দেখা গেছে, এবার বৃত্তি পেয়েছে ৮২ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ২০২২ সালের বৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, এবার ট্যালেন্টপুলে (মেধাবৃত্তি) ৩৩ হাজার ও ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থী সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে।

বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd ও মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.mopme.gov.bd এবং স্থানীয়ভাবে বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় এবং উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে পাওয়া যাবে।

বিগত বছরগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই বৃত্তি দেওয়া হতো। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় প্রাথমিক বৃত্তিও দেওয়া হয়নি।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ২০২২ সাল থেকে আলাদা করে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গত ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশে একযোগে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা হয়। বাংলা, প্রাথমিক গণিত, ইংরেজি ও প্রাথমিক বিজ্ঞান এ চারটি বিষয়ে হয় পরীক্ষা। এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় পাঁচ লাখ ৩৯২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করে, পরীক্ষায় অংশ নেয় চার লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ জন শিক্ষার্থী। মোট নম্বর ছিল ১০০ এবং সময় ছিল দুই ঘণ্টা।

ঝরে পড়া শিশুদের শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫৮ জনকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমিত পরিসরে প্রতিযোগিতা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই ঘণ্টার এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় ও বিষয় কম থাকায় শিশুদের ওপর বাড়তি কোনো চাপ তৈরি হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস এবং এ বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে শিশুর শিক্ষা ব্যয়ের একটি অংশের দায়িত্ব নেওয়ায় রাষ্ট্রের প্রতি পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ আরও প্রবলভাবে অনুভূত হবে এবং এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভিত আরও শক্তিশালী ও নাগরিকদের সাথে রাষ্ট্রের বন্ধন শক্তিশালী হবে বলে আমি মনে করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা/থানার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যার অনুপাতে উপজেলা/থানা কোটা নির্ধারণ করে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি বণ্টন করা হয়। সাধারণ বৃত্তি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ওয়ার্ডভিত্তিক বিতরণ করা হয়। এ বছর সাধারণ গ্রেডে বৃত্তির ক্ষেত্রে আট হাজার ১৪৫টি ইউনিয়ন/পৌরসভা ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৬টি (তিনজন ছাত্র ও তিনজন ছাত্রী) হিসেবে ৪৮ হাজার ৮৭০টি এবং অবশিষ্ট ৬৩০টি বৃত্তি থেকে প্রতিটি উপজেলা/থানায় একটি করে ৫১৩টি সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।’

‘বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃত্তির অর্থের পরিমাণও ২০১৫ সাল থেকে বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়া হলেও ২০১৫ সাল থেকে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ১৫০ টাকার পরিবর্তে ২২৫ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া উভয় ধরনের বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতি বছর ২২৫ টাকা করে এককালীন দেওয়া হচ্ছে’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘নীতিমালা সংশোধনের কারণে উপবৃত্তির টাকা দিতে দেরি হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে। অল্প সময়ের মধ্যে বকেয়াসহ টাকা পেয়ে যাবে। আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যে তারা মোবাইল অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে