শবে বরাতের নামাজ পড়া হলো না তাদের
শবে বরাত উপলক্ষে মা রোজা রেখেছেন। তার জন্য ইফতার আনতে ছেলে সুমন ফুটপাত থেকে ইফতারও কিনছিলেন। ইফতার নিয়ে আর ঘরে ফেরা হলো না। গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
জানা গেছে, বিস্ফোরণে সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সুমন। তার মাথায় কাঁচ ছিটকে পড়ে। মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। কিছুক্ষণ পর পথচারী একজন ভ্যানে করে ঢাকা মেডিকেল পাঠান। ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সুমন। তাকে দেখতে বাবা- মা, বোন, বন্ধু ও স্বজনরা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শুধু সুমন নয়। গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় শবে বরাত উপলক্ষে নফল নামাজ আদায় করা হয়নি অনেকের। ফয়ার সার্ভিস লিডার সুলতান মিয়া কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে ঘটনাস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে মুখে পানি দিচ্ছিলেন। উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন। এসময় তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল শবে বরাতের নামাজ আদায় করবো। গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় আর নামাজ আদায় করা হলো না। পেশাগত দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
শুধু সুলতান নয়, সাংবাদিক, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ছুটে এসেছেন এখানে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ইবাদত বন্দেগিতে কাটায় এ রাত। এ জন্য পত্রিকায় ছুটি দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদস্যরা সর্বদা দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকেন। শবেবরাত উপলক্ষে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইচ্ছে ছিল দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নামাজ আদায় করা। বিস্ফোরণের ঘটনায় চলে আসতে হয়েছে গুলিস্তানে। দায়িত্বরত পুলিশের এক কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান বলেন, ইচ্ছে ছিল অফিসের কাজ শেষে আজ বাসায় ফিরে শবে বরাতের নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেবো। কিন্তু অফিস শেষ হওয়ার আগেই শুনি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা। সব বাদ দিয়ে তাই ঘটনাস্থলে চলে আসতে হয়েছে।
এদের বাইরে আজ আহত নিহত পরিবারের মুসলমান ধর্মের অনেকের বরাতের নামাজ আদায় করা হচ্ছে না। প্রিয়জনের পাশে বসে পরিবারের সদস্যরা সৃষ্টি কর্তার কাছে দোয়া কামনা করছেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন