সতর্কতা বাড়াতে জাতিসংঘের সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শহরগুলোতে আরও বেশি খোলা জায়গা ও উন্মুক্ত পরিসর থাকাসহ ভূমিকম্পের প্রস্তুতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। একইসঙ্গে দুর্যোগঝুঁকি প্রশমনবিষয়ক সেন্দাই ফ্রেমওয়াকের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
সোমবার (৩ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের দুর্যোগঝুঁকি প্রশমনবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) মামি মিজুতোরির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ সহায়তা চান।
সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যমেয়াদি স্টক টেকিং কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদানের প্রশংসা করেন মিজুতোরি। দেশজুড়ে ভূমিকম্প মডেলিং প্রস্তুত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জাতিসংঘ একসঙ্গে কাজ করতে চায় বলেও জানান গুতেরেসের এ প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তার প্রতি জোর দেন আবদুল মোমেন। অন্যদিকে বিভিন্ন দুর্যোগে আগাম সতর্ক ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন পেতে ‘ব্যবধান বিশ্লেষণে’ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি।
‘ব্যবধান বিশ্লেষণ’ হলো কোনো কার্যক্রম বা প্রকল্পের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করার একটি পদ্ধতি, যা দিয়ে সেই প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বা উদ্দেশ্যগুলো পূরণ হচ্ছে কি না এবং যদি না হয়, তবে তা পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নির্ণয় করা হয়।
দুর্যোগ প্রশমনে বাংলাদেশের যেসব ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অন্য দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোকে অবগত করতে আহ্বান জানিয়েছেন মিজুতোরি। দুর্যোগ-সংক্রান্ত আইন, দুর্যোগ প্রশমনে আন্তঃসংস্থা প্রস্তুতি সমন্বয়, বিশেষ করে দুর্যোগের সময় প্রতিবন্ধীসহ সবাইকে অন্তর্ভুক্তিকরণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ যাতে আন্তর্জাতিকভাবে সরব হয়, সেই পরামর্শ দেন সাবেক এ জাপানি কূটনীতিক।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতিতে স্থানীয় লোকজনকে অন্তর্ভুক্তিকরণের অভিজ্ঞতা যদি কোনো দেশ নিতে চায়, তবে তাদের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানানো হবে বলে প্রস্তাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময়ে দেশের অন্যান্য অংশেও বিভিন্ন দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে স্বেচ্ছাসেবক-নির্ভর ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির মডেল প্রয়োগ করতে পরামর্শ দেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি।
এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে দুর্যোগ-সহনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা ও প্রযুক্তির ঘাটতির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন আবদুল মোমেন ও মিজুতোরি। এক্ষেত্রে সহায়তা বাড়াতে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন তারা।
জাতিসংঘ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প মাঠপর্যায়ে পরিদর্শনে চারদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন মিজুতোরি। সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসোক), জাতিসংঘ অছি পরিষদ, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ও জাতিসংঘ সচিবালয় এ ছয়টি সংস্থা মিলে গঠিত জাতিসংঘ ব্যবস্থা।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন