তলপেটে লাথি মারলে রাস্তায় পড়ে যান হিরো আলম
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন। সেখানে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি কিলঘুসি মারা হয় বলে মামলার এজাহারে জানিয়েছেন বাদী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মারধরের এক পর্যায়ে অজ্ঞাতনামা একজন হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাতে হিরো আলমের কলার চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন এবং অপর একজন তার তলপেটে লাথি মারলে রাস্তায় পড়ে যান।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী সুজন রহমান শুভ। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে। মামলার এজাহারে এসব কথা উল্লেখ করেন মামলার বাদী।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী পরান সরকারসহ প্রতিনিধি রাজীব খন্দকার, মো. রনি, মো. আল-আমিনসহ অনেকে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় হিরো আলম এবং আমিসহ প্রতিনিধিরা বিকেল সাড়ে ৩টায় বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শনে যাই। অতঃপর প্রার্থী হিরো আলমসহ আমরা পাঁচ-ছয়জন বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের গতিরোধ করে বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ করতে থাকে।
একপর্যায়ে বিবাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে প্রার্থী হিরো আলমকে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি কিলঘুসি মারতে থাকে। মারধরের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতনামা একজন হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাতে হিরো আলমের কলার চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে এবং অপর একজন তার তলপেটে লাথি মারলে হিরো আলম রাস্তায় পড়ে যান। তখন অন্য বিবাদীরা হিরো আলমকে এলোপাতাড়ি কিলঘুসি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং টানাহেঁচড়া করে। ওই সময়ে আমি এবং অপর ব্যক্তিগত সহকারী পরান সরকার মিলে হিরো আলমকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তারা আমাকেসহ ব্যক্তিগত সহকারী পরান সরকার, রাজীব খন্দকার, রনি ও আল-আমিনকে মারপিট করে জখম করে। অতঃপর কেন্দ্রে ডিউটিরত পুলিশ এবং একতারা প্রতীকের সমর্থনকারীদের সহায়তায় হিরো আলমসহ আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।
সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন হিরো আলম। পরে তাকে রামপুরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করেন হিরো আলম। সেখানে তিনি এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন কবেন না বলে জানান।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় সাতজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
এদিকে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস মঙ্গলবার দুপুরে এক টুইটে এ উদ্বেগের কথা জানান।
টুইট বার্তায় তিনি লিখেন, ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয়। সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত ওসুরক্ষিত করতে হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন