প্রকাশিত : ৭ আগস্ট, ২০২৩ ১৬:৩৪

সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, সতর্ক সংকেত বহাল

অনলাইন ডেস্ক
সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, সতর্ক সংকেত বহাল

এবার বর্ষাকাল আসার পর সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। গত মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রাও ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। অবশেষে শ্রাবণের শেষে এসে বৃষ্টিতে বৃষ্টিতে যেন সত্যিই বর্ষাকাল নেমেছে। বৃষ্টির এ প্রবণতা আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

বঙ্গোপসাগর থেকে গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে উঠতেই গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছে। অনুকূল পরিবেশ পেয়ে সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি বায়ু। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উপকূলীয় তিন বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০০ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে। চট্টগ্রাম এলাকায় ঘটছে পাহাড় ধসের ঘটনা।

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে বজ্রমেঘ সৃষ্টি হচ্ছে, এজন্য দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে সোমবারও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।

ঢাকায় ভোররাত থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে সকালের দিকে কমে যায় বৃষ্টি। দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি না থাকলেও আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে ছিল। যে কোনো সময় আবার ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ভোররাতের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সবেচেয়ে বেশি ৩২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। এছাড়া বেশি বৃষ্টির মধ্যে খেপুপাড়ায় ৩১৬, বান্দরবানে ২৮৬, হাতিয়ায় ২২১, কুতুবদিয়ায় ১৬৬, কুমিল্লায় ১৫৪, ফেনীতে ১৫৪, সন্দ্বীপে ১৫৪, রাঙ্গামাটিতে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া দপ্তর।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আগামী তিনদিন আবহাওয়া পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানান হাফিজুর রহমান।

রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল সৈয়দপুরে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সোমবার সকালে সর্বশেষ সামুদ্রিক আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার সকাল ৯ পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

অতিভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্কবাণীতে জানানো হয়।

অন্যদিকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে