প্রকাশিত : ৯ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:১৩

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লিলির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে পাবনার উপকারভোগী অন্ধ লিলি বেগমের চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (৯ আগস্ট) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় ২২ হাজার ১০১ পরিবারকে ভূমিসহ নতুন ঘর হস্তান্তর করেন তিনি।

সকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসত সোনার বাংলা পল্লী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাগ্রহীতাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন।

মতবিনিময়কালে পাবনার উপকারভোগী মোছা. লিলি বেগম জানান, তার সন্তানের ৮ মাস থাকতে হঠাৎ অন্ধ হয়ে যান। পরে স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। বাবা-মা তাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ভিটে বাড়ি খোয়ায়। তারপরও চিকিৎসা শেষ করা যায়নি। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি ঘর পেয়েছেন। বাবা-মা সন্তান নিয়ে থাকতে পারবেন। এখন তার সন্তানের বয়স ৮ বছর কিন্তু তার চোখ দিয়ে সন্তানকে দেখতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারলেও দেখতে পারছিলেন না লিলি বেগম।

এসময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, তার চিকিৎসার অগ্রগতি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পাবনার জেলা প্রশাসক তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন বলে তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করেন।

গৃহ হস্তান্তরের আগে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক সহযোগিতাটা করে দিলাম। বাকি জীবন জীবিকা গড়ে তোলার দায়িত্ব আপনাদের। আমরা চাই, এখান থেকে আপনারা নিজেদের অবস্থার উন্নতি করে উন্নত জীবনের অধিকারী হবেন।’

তিনি বলেন, বাবা-মা ভাইবোন সব হারিয়েছি। ১৯৮১ সালে এসে এ দেশের মানুষকেই আপনজন হিসেবে পেয়েছি। তাদের মাঝে হারানো বাবা-মা ভাইবোনকে খুঁজে পেয়েছি। আমার তো আর কিছু পাওয়ার নেই। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। দরিদ্র অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও নতুন ঘর করে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এ কাজটি শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি লক্ষ্মীপুরের পোড়াগাছায় এটি করেছিলেন। তার কাজটিই আমরা এখন চালু রেখেছি। বাবা নেই, যাকে পোড়াগাছায় আশ্রয়ণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই কৃষক নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতও নেই। নিশ্চয়ই আমার বাবা জান্নাত থেকে এই কাজটি দেখছেন, খুশি হচ্ছেন।

আমরা চাই, একটি মানুষও যেন অযত্নে অবহেলায় না থাকে, যে মানুষগুলোকে আমার বাবা সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছেন।

এসময় যারা এই আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমি উদ্ধার, ঘর তৈরিসহ নানা অসাধ্য আপনরা সাধন করলেন। আমি আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

২২ হাজার ১০১টি বাড়ি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে আরও ১২টি জেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত হয়। এরই মধ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪১টি জেলার আরও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মৃক্ত ঘোষণা করা হয়। যার ফলে মোট উপজেলার সংখ্যা হবে ৩৩৪টি এবং এই ১২টি জেলাসহ সম্পূর্ণ গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২১টিতে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে