বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে থাকছে সংবিধান সংস্কারের দাবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামী ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রদান করবে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা এবং সংবিধান সংস্কারের দাবি তুলবে। ইতোমধ্যে, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে এবং এটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পাঠানো হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলের নেতা-কর্মীরা, শহীদ পরিবার এবং আহতরা শহীদ মিনারে উপস্থিত থাকবেন।
ঘোষণাপত্রের মূল দাবিগুলি:
ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালে উপনিবেশ থেকে মুক্তি, পাকিস্তানের বৈষম্য, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বাহাত্তরের সংবিধানের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সামরিক শাসন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, এবং রাজনৈতিক স্বার্থে সংবিধান সংশোধন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
পরবর্তী বাংলাদেশের কাঠামো:
ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের ছাত্র ও জনগণ ব্যাপক জনসমর্থন অর্জন করেছে এবং হাজার হাজার মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছে। তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং সামরিক শাসন বা ১/১১ এর পুনরাবৃত্তি চায় না। এছাড়া, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জুলাইয়ের গণহত্যার সুবিচার চাওয়া হয়েছে।
মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে এবং আওয়ামী লীগ দল হিসেবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে বাংলাদেশে।
একটি নতুন দিশার দিকে:
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও জানান, ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের আগামী দিনের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, এবং ইশতেহার লিপিবদ্ধ থাকবে, যা কোনো দলের নয় বরং পুরো জাতির প্রতিফলন হিসেবে কাজ করবে। ৭২-এর সংবিধান এবং মুজিববাদী চেতনার বিরুদ্ধে মানুষের যে অবস্থান, তার স্বীকৃতি জানানো হবে।
সংবিধানের সংস্কারের দাবি:
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিনও ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব এবং প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন। তারা জানান, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের পরবর্তী বাহাত্তরের সংবিধানটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। এবারে, নতুন সংবিধান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার দাবি উঠেছে।
এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যান্য নেতারাও, যারা আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।