প্রকাশিত : ২৮ জুন, ২০২৫ ০০:৫৭

চুরি করা গম আমদানির অভিযোগ, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

চাঁদনী ডিজিটাল ডেস্কঃ
চুরি করা গম আমদানির অভিযোগ, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

রাশিয়া অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত ‘চুরি করা’ গম আমদানির অভিযোগে বাংলাদেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বারস্থ হতে যাচ্ছে ইউক্রেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স

ইউক্রেনের এক শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারকে একাধিকবার সতর্ক করার পরও এই আমদানি কার্যক্রম বন্ধ না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

কী অভিযোগ ইউক্রেনের?

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চল থেকে সংগৃহীত গম কফকাজ বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি করা হচ্ছে, এবং তা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ইউক্রেনের নয়াদিল্লিস্থ দূতাবাস চলতি বছর বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্তত চারটি চিঠি পাঠিয়েছে। এসব চিঠিতে গমবাহী জাহাজগুলোর নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, যাত্রার তারিখ ও সম্ভাব্য আগমনের সময় উল্লেখ রয়েছে।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক রয়টার্সকে বলেন:

“আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, রাশিয়া নিজের গমের সঙ্গে অধিকৃত অঞ্চলের গম মিশিয়ে রপ্তানি করছে, যাতে উৎস গোপন রাখা যায়। এটি স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ।”

নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি

গত ১১ জুন পাঠানো এক চিঠিতে ইউক্রেন বাংলাদেশকে কঠোর ভাষায় সতর্ক করে জানিয়েছে—

“চুরি করা গম আমদানি করলে শুধু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে।”

বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বা রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান:

“বাংলাদেশ কখনো চুরি করা গম আমদানি করে না। আমরা অধিকৃত অঞ্চলের গম আমদানি করছি না।”

কৃষিপণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক বিতর্ক

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই ইউক্রেন অভিযোগ করে আসছে যে, রাশিয়া তাদের দখলকৃত কৃষি জমি থেকে শস্য সংগ্রহ করে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করছে।
ইইউ ইতোমধ্যে রাশিয়ার ছায়া নৌবহরের ৩৪২টি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যেগুলো তেল, অস্ত্র ও খাদ্য পরিবহনে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইইউর মুখপাত্র আনিতা হিপার এক বিবৃতিতে বলেন:

“অভিযুক্ত জাহাজগুলো বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। তবে চুরি করা গমের অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রাশিয়ার দাবি ও তথ্য

রাশিয়ার পরিসংখ্যান বলছে, দখলকৃত অঞ্চলগুলো থেকে ২০২৪ সালের মোট গম উৎপাদনের প্রায় ৩% সরবরাহ হয়েছে। রুশ প্রতিষ্ঠান RUSAGROTRANS এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মে মাসে রুশ গম আমদানিতে চতুর্থ বৃহত্তম ক্রেতা ছিল।

এক রুশ ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন:

“কোনো গম কোথায় উৎপাদিত, সেটা নির্ধারণ করা জটিল। এগুলো সোনা বা হীরা নয় যে উৎস চিহ্নিত করা যাবে।”

উপরে