বগুড়ার শ্যামল শিশির ‘বিয়ের গীত’ গবেষণায় কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পেলেন
বাংলাদেশি গবেষক, লেখক ও নির্মাতা শ্যামল শিশিরকে রিসার্চ ইন্টার্ন হিসেবে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছে কানাডার কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের উদ্যোগে সেন্টার ফর ওরাল হিস্ট্রি অ্যান্ড ডিজিটাল স্টোরিটেলিং (COHDS) থেকে এই আমন্ত্রণ এসেছে।
১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটির ইমিগ্রেশন স্পেশালিস্ট তাঁর নামে স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করেন—শ্যামল শিশির আইআরসিসি’র বিশেষ নীতির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
কনকর্ডিয়ার এই আমন্ত্রণ এসেছে তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা ‘বাংলাদেশের বিয়ের গীত ও নারীর মৌখিক সৃজনশীলতা’–কে কেন্দ্র করে। বর্তমানে তাঁর নির্মাণাধীন ডকুমেন্টারি প্রকল্প ‘বিয়ের গীত: নারীর সৃজনশীলতার অদেখা রূপ’ গবেষণা ও প্রোডাকশন পর্যায়ে রয়েছে।
বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীর মৌখিক ঐতিহ্য, বিয়ের গান, আচার-অনুষ্ঠান ও লোকসাংস্কৃতিক স্মৃতি নিয়ে তাঁর মাঠপর্যায়ের সংগ্রহ, রেকর্ডিং ও বিশ্লেষণ কনকর্ডিয়ার গবেষণার সঙ্গে নতুন সংযোগ তৈরি করেছে।
কানাডায় অবস্থানকালে শ্যামল শিশির কাজ করবেন কনকর্ডিয়ার একজন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও COHDS-এর লিড কো-ডিরেক্টরের তত্ত্বাবধানে। সেখানে তিনি ফোকলোর, মৌখিক ইতিহাস, নারীর সৃজনশীলতা ও ডিজিটাল স্টোরিটেলিং বিষয়ে যৌথ গবেষণায় অংশ নেবেন।
লোকসংস্কৃতি—বিশেষ করে নারীর মৌখিক সৃজনশীলতা—নিয়ে শ্যামল শিশিরের কাজ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। বিয়ের গীতকে কেন্দ্র করে তাঁর গবেষণা শুধুই সাংস্কৃতিক দলিল নয়; এটি নারীর অনুভূতি, স্মৃতি ও জীবনসংগ্রামের এক মূল্যবান ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করা শ্যামল শিশির লোকজ সংস্কৃতির আবহে বেড়ে উঠেছেন এবং বাংলাদেশের মৌখিক ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছেন। কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটির এই আমন্ত্রণ তাঁর গবেষণার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
শ্যামল শিশির বলেন—
“বাংলাদেশের নারীরা বিয়ের গীতের মাধ্যমে শত শত বছর ধরে নিজেদের গল্প বলে আসছেন। সেই গল্পই আমি বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই। কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটির এই সম্মানজনক সুযোগ আমার গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।”
