অভিনব এক বিজ্ঞান মেলায়
বিজ্ঞান মেলা বলতেই চোখে ভাসে সারি সারি বিজ্ঞান প্রকল্প। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির যুগে যেখানে প্রযুক্তি শুধু বিজ্ঞান কল্পনাতে সীমাবদ্ধ নয়, সেখানে কেমন হতে পারে বিজ্ঞান মেলা? শনিবার এ রকমই এক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে। স্কুলটির তথ্য ও প্রযুক্তি ক্লাবের আয়োজনে প্রথম আইডিয়াল অ্যাসোসিয়েশন অব ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি শিরোনামে এ মেলা যেন সম্পূর্ণ অন্য এক জগৎ। সাধারণ প্রকল্প প্রদর্শনীর পাশাপাশি এই মেলায় রয়েছে ২৩টি অভিনব ইভেন্টও।তিন দিনের এই মেলায় যেমন আছে কোডিং প্রতিযোগিতা, অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড, প্রযুক্তি বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা, সাইফার চ্যালেঞ্জ, ট্রাস চ্যালেঞ্জের মতো অভিনব বিষয়, তেমনি আছে প্রযুক্তিবিষয়ক দেয়াল পত্রিকা ও স্ক্র্যাপ বুকও। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যা আছে তা হলো গেমিং কমপিটিশন। বিশাল বিশাল কম্পিউটার মনিটর বসিয়ে তিনতলাজুড়ে হচ্ছে গেমিং কমপিটিশন। ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটিতে গেম উপভোগের সুযোগও রয়েছে সেখানে। আইডিয়াল স্কুলের তথ্য ও প্রযুক্তি ক্লাবের মডারেটর মো. ফিদা হোসেন বলেন, ‘এই পুরো উৎসবটার পরিকল্পনা করেছে আমাদের ছাত্ররা। তাঁরা বিশ্বের সেরা সব তথ্যপ্রযুক্তি মেলার বিষয় তথ্য সংগ্রহ করে এই মেলা আয়োজন করেছে। যে কারণে এই মেলাটি আসলেই প্রচলিত ধারার বিজ্ঞান মেলা থেকে আলাদা।’মেলায় বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা মেলে চমৎকার সব আয়োজনের। একটি তলা সাজানো হয়েছে দেয়াল পত্রিকা দিয়ে, যেখানে কৃত্রিম অঙ্গ থেকে শুরু করে উইকিলিকসের মতো তথ্যপ্রযুক্তির আলোচ্য বিষয়গুলো সাজানো হয়েছে নৈপুণ্যের সঙ্গে। এই অংশেই আছে স্ক্রাপ বুক প্রদর্শনী, যেখানে এক একজন প্রতিযোগী স্ক্রাপ বুক বানিয়ে প্রকাশ করেছেন তার তথ্যপ্রযুক্তির অভিজ্ঞতা। মডারেটর মো. ফিদা হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি অনেক ধরনের বিষয় মেলায় যুক্ত করতে যেন প্রত্যেক শিক্ষার্থীই তাদের আগ্রহের কিছু না কিছু মেলায় এসে খুঁজে পায়।’সারা দেশ থেকে প্রায় ১৫০টি স্কুলের শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছে এই মেলায়। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল থেকে রাফিদ ও আসরার মেলায় এসেছে তাদের ডেভেলপ করা অ্যাপ ‘এনিসিস’ নিয়ে। অ্যাপটি একেবারেই সাধারণ হলেও এর কাজটি খুব অসাধারণ। এই অ্যাপে জড়ো করা হয়েছে একটি শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বর। আবার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সাফিন ও তানহা এসেছে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে। নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে সাফিন বলে, এই বিজ্ঞান মেলাটা থেকে এমন সব বিষয় শেখা যাচ্ছে যা পাঠ্যবইতেও নেই। তা ছাড়াও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও এ রকম মেলা অনেক জরুরি। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় ছিল বিজ্ঞানচিন্তা।